লক্ষ্মীপুর: অসুস্থতার অজুহাতে ছেড়ে দেওয়া লুট মামলার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১২ জুন) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল কমলনগর আদালতের বিচারক তারেক আজিজ এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে দোকানে ঢুকে লুটের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি শাহজাহান (৪৫) ও আবুল কালামের (৫৫) জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিকেলে মামলার প্রধান আসামি শাহজাহানকে ধরে অসুস্থতার অজুহাতে ছেড়ে দেন কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান।
এ নিয়ে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। রোববার (১১ জুন) ওসি সোলাইমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন দোকান লুট মামলার বাদী মজিবুর রহমান। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
আদালতের পেশকার জসিম উদ্দিন বলেন, দোকান লুট মামলার আসামি শাহজাহান ও কালাম সোমবার (১২ জুন) আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার শাহজাহান কমলনগর উপজেলার চরজাঙ্গালিয়া গ্রামের সামসুদ্দিনের ছেলে ও কালাম একই এলাকার মৃত মহসিন মুন্সির ছেলে। এ মামলায় ৮ জুন গ্রেপ্তার হওয়া আসামি মইন উদ্দিন লক্ষ্মীপুর কারাগারে রয়েছে।
মামলার বাদী মজিবুর রহমানের আইনজীবী মো. সোলাইমান মোল্লা জানান, ৪ জুন লুটের ঘটনায় দোকান মালিক মজিবুর রহমান ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে আদালতের বিচারক আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ৭ জুন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কমলনগর থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নথিভুক্ত করা হয়।
পরদিন বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিকেলে তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন এজাহারভুক্ত আসামি শাহজাহান ও মইন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেন। কিন্তু একই দিন রাতে থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান আসামি শাহজাহানকে ছেড়ে দেন। এ ঘটনায় রোববার (১১ জুন) মজিবুর রহমান বাদী হয়ে একই আদালতে ওসিসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। এতে আদালতের বিচারক তারেক আজিজ মামলাটি আমলে নিয়ে ওসিসহ এজাহারভুক্ত ৫ আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। আগামী ২০ জুন তাদের আদালতে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এজাহার সূত্র জানায়, মামলার আসামি মজিবুর তোরাবগঞ্জ বাজারের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী। প্রতিবেশী শাহজাহানদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে শাহজাহানদের একটি মামলায় গত ১৮ এপ্রিল পুলিশ মজিবুরকে গ্রেপ্তার করে। ২৪ এপ্রিল শাহজাহানসহ তার লোকজন মজিবুরের দোকানের গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢোকে। দোকানের ওপরেই তার বাসভবন। ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে মজিবুরের স্ত্রী নিচে নামলে শাহজাহানসহ তার লোকজন তাকে দোকানের এক কোনে বেঁধে রাখে। এসময় চিৎকার করলে তাকে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। একপর্যায়ে তারা দোকানের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। স্থানীয়রা মজিবুরের স্ত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। মজিবুর জেল থেকে জামিনে বের হয়ে ৪ জুন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল কমলনগর আদালতে শাহজাহানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
** লুট মামলার প্রধান আসামিকে ধরে ছেড়ে দিলেন ওসি
** আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় কমলনগর থানার ওসির নামে মামলা
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
আরএ