ভোলা: ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই অবাধে চলছে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেণু শিকার। এক শ্রেণীর মুনাফালোভী জেলেচক্র মশারি জাল দিয়ে বাগদা শিকারে নেমে পড়ছেন।
বাগদা রেণু শিকারের কারণে হুমকির মুখে পড়ছে দেশীয় প্রজাতির ছোট ছোট পোনা মাছ। প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে প্রায় অর্ধকোটি পিস বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা।
জেলেরা বলছেন, ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় কাজ নেই তাই পেটের দায়ে মাছ শিকার করছেন। অন্যদিকে মৎস্য বিভাগ বলছে বাগদা ও গলদা রেণু রক্ষায় অভিযান চলছে।
ভোলার তুলাতলী, রাজাপুর, হাকিমুদ্দি, বেতুয়াসহ বেশ কয়েকটি স্পটে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নদীর তীর ঘেঁষে কিংবা চরের মধ্যে মশারি জাল দিয়ে প্রতিদিন চলছে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেণু শিকার।
এরপর বিশেষ পাত্রে রেণুগুলো রেখে অন্য প্রজাতির মাছ বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছসহ অন্য প্রজাতির ছোট ছোট পোনা ধ্বংস হতে চলছে।
জেলেদের ধরা এসব রেণু বিভিন্ন কৌশলে চোরাই পথে পাচার করছেন পাইকাররা।
অভিযোগ উঠেছে, ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবাধে বাগদা শিকার চললেও যেন রেণু শিকার বন্ধে নেই কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ। এতে বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন শিকাররীরা। তবে নিষেধ জেনেও কোনো কোনো জেলে পেটের দায়ে নামছেন শিকারে।
কয়েকজন জেলে জানান, সাগরে ৬৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ, তাই বেকার জেলেরা সংসারের খরচ জোগাতে রেণু শিকারে নেমে পড়ছেন। প্রতি পিস রেণু বিক্রি হচ্ছে এক টাকা দরে। এক হাজার রেণুর মূল্য এক হাজার টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলেরা জানান, এক হাজার রেণুর সঙ্গে অন্য প্রজাতির মাছও জালে উঠে আসে, তখন বাগদা বা গলদা রেণু রেখে অন্য মাছ ফেলে দিতে হয়। এভাবে দেশীয় মাছ নষ্ট হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় ভোলার এ রেণুর চাহিদা থাকায় মুনাফার আশায় জেলেদের মধ্যে কেউ কেউ বাগদা শিকারে নেমে পড়ছেন।
মাছ বাছাই করতে গিয়ে প্রতিদিন প্রায় অর্ধ কোটি রেণু ধ্বংস করা হচ্ছে বলে জানায় এলাকাবাসী।
তবে বাগদা শিকার বন্ধে অভিযান চলছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লা। তিনি বলেন, আমরা জেলেদের সচেতন করছি, তারা যাতে বাগদা রেণু ধরা থেকে বিরত থাকে। তারপরেও যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বাগদা রেণু শিকার বন্ধে করে দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষার দাবি ভোলাবাসীর।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৩
আরএ