ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

তুলশীগঙ্গার তীরে ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির মেলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
তুলশীগঙ্গার তীরে ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের তুলশীগঙ্গা নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির মেলা বসেছে। সন্ন্যাস পূজাকে ঘিরে ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতি বছর নদী তীরবর্তী সন্ন্যাস মন্দিরের পাশে এই মেলা আয়োজন করা হয়।

এ মেলা সন্যাসতলীর ঘুড়ির মেলা হিসেবে পরিচিত।

মেলার সঠিক ইতিহাস কেউ বলতে না পারলেও জনশ্রুতি রয়েছে সন্যাসী পুজাকে ঘিরে দুইশ বছরের অধিক সময় আগে মেলাটির উৎপত্তি ঘটে। সেই থেকে পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ শুক্রবার বিকেলে বসে গ্রামীণ এ মেলা। তবে এবারই প্রথম আষার মাসের দুই তারিখে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হলো। মেলায় আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দুর দুরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে।

জয়পুরহাটের এই সন্যাসতলীতে সনাতন ধর্মের লোকজন মন্দিরে সন্যাসীকে পূজা দিয়ে দিনটি উৎযাপন করলেও এটি মূলত হিন্দু-মুসলিমের একটি মিলন মেলা। বিকেলের পর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মেলায় মানুষের ঢল নামে। মেলাকে ঘিরে জামাই এবং স্বজনদের আপ্যায়ন চলে মেলা সংলগ্ন আশপাশের কয়েক গ্রামে। রং বেরংয়ের ঘুড়ি মেলার মূল আকর্ষণ হলেও বর্তমানে মেলায় বসে রকমারি মিষ্টির দোকান। যেখানে বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি ও চিনির শাহী জিলাপি আকৃষ্ট করে মেলায় আসা দর্শকদের।  

মেলায় বাঁশ কাঠ ও লোহার তৈরি সংসারের বিভিন্ন সামগ্রী ও মাছ ধরার নানা যন্ত্রের আমদানিও নজর কাড়ে মানুষের। শিশুদের খেলাধুলার জিনিস পত্র এবং কসমেটিক্সের দোকানও বসে এ মেলায়। জামাই-মেয়ের পাশাপাশি স্বজনদের আপ্যায়নের রীতি এলাকায় চলে আসছে এ মেলাকে ঘিরেই।  

স্থানীয় মহব্বতপুর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম, কুসুম শহরের আজাদুল, আছরাঙ্গা গ্রামের জসিমসহ অনেকেই জানান, আমাদের বাব-দাদারা এই মেলায় আসতো, আমরাও এই মেলায় কেনাকাটা করতে এসেছি। মেলাকে ঘিরে আশে পাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে।  

মেলায় আসা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ফারুক হোসেন, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার নিতাই চন্দ্র, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা আলিফ হোসেন বলেন, প্রতি বছর এই সন্যাসতলী মেলাতে আসি আমরা শুধু ঘুড়ি কিনতে। ঘুড়ি ছাড়াও এখানে সব ধরনের জিনিস পত্র পাওয় যায়।

সন্যাসতলী মেলা কমিটির সভাপতি শাজাহান আলী বলেন, প্রতি বছরের মত এবারেও বসেছে সন্বাসতলীর মেলা এই মেলা প্রায় দুইশ বছরের পুরাতন মেলা। এ মেলা হিন্দু মুসলিম সবাই মিলে পরিচালনা করে থাকি।

ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই সন্নাসতলীর মেলার মূল আর্কষণ ঘুড়ি। এ মেলাকে ঘিরে আশে পাশের জেলা থেকে হাজারে মানুষের সমাগম ঘটে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।