ঢাকা: বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র নিয়ে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) দুটি ষড়যন্ত্র নিয়ে এগোচ্ছে।
রোববার (১৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন।
‘শেখ হাসিনাকে মারতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে’—সিরাজগঞ্জের বিএনপির এক নেতা এমন মন্তব্য করেছেন। এ ঘটনায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি বলছে যে, বিনা বিচারে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এর আগে রাজশাহীতে বিএনপির আহ্বায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন, এরপর সিরাজগঞ্জের সমাবেশে স্থানীয় বিএনপির নেতা রাশেদুল হাসান রঞ্জনও একই হুমকি দিয়েছেন। বিএনপি যে ভেতরে-ভেতরে সেই ষড়যন্ত্রই করছে, তাদের নেতাদের কথাবার্তা থেকে তা-ই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে অপশক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, যে আন্তর্জাতিক অপশক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, সেই দুই অপশক্তি মিলে যখন বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছিল, তখন তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। আজ বিএনপিসহ যেসব রাজনৈতিক অপশক্তি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ। তাই আজ তারা ষড়যন্ত্রের পথই বেছে নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যেভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে হত্যা করা হয়েছিল, বিএনপিও যে আজ একই পথে হাঁটছে, একই পরিকল্পনা করছে। তারই বহিঃপ্রকাশ হলো বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাদের বক্তব্য।
হাছান মাহমুদ বলেন, সিরাঞ্জগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে, আমি তার সর্বাত্মক নিন্দা জানাই। বিএনপির উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তার পক্ষাবলম্বন করে বিএনপি স্বীকার করেছে, এটি তাদেরই বক্তব্য।
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গতানুগতিক বক্তব্য। প্রতিদিনই তিনি এসব কথা বলেন। কিন্তু সংবিধান অনুসারে চলতি সরকারই আগামী নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করবে। শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। ভারত, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও তা-ই হবে।
সংবিধানের কোনো ব্যত্যয় হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এমনকি আন্তর্জাতিকভাবেও তাদের এই দাবির প্রতি কোনো সমর্থন নেই। যুক্তরাষ্ট্রও তাদের দাবিকে সমর্থন করেনি। এটি শুধু মির্জা ফখরুলের মুখেই আছে। তাকে তত্ত্বাবধায়ক রোগে পেয়েছে। আশা করি, তিনি এ রোগ থেকে শিগগিরই মুক্তি পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন জানিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছে চীন। এ নিয়ে সরকারে কোনো অস্বস্তি আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হলো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। আন্তর্জাতিকভাবে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী অবস্থান বিভিন্ন সময় দেখেছি। বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে মন্তব্য করেছে চীন। আমরা সেটা পর্যবেক্ষণ করছি।
তিনি বলেন, দু দেশের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, গত ৫১ বছরে আমাদের পথচলায় তাদের বিশাল ভূমিকা আছে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কাজ করছি। একই সঙ্গে চীনও আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। এই দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে তারা বিশাল ভূমিকা রেখেছে। কাজেই সব দেশের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক ভালো। কিন্তু চীন-যুক্তরাষ্ট্র দুদেশই আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ