ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাংবাদিকরা মর্গ থেকে যাওয়ার পরেই আলালের লাশ নিয়ে যায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
সাংবাদিকরা মর্গ থেকে যাওয়ার পরেই আলালের লাশ নিয়ে যায়

ঢাকা: গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর হাসপাতালে মারা যাওয়া আলাল উদ্দিনের (৫০) বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে মর্গে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরা।  

সকাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে অবস্থান করলেও মৃতের কোনো স্বজনের বা কোনো পুলিশের দেখাও পায়নি সাংবাদিকরা।

 

একপর্যায়ে এক এক করে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এর পর পরই পুলিশ তড়িঘড়ি করে এসে আলাল উদ্দিনের মরদেহ একটি ফ্রিজাব গাড়িতে করে নিয়ে যায়। তখন মৃত আলালের ভাই উপস্থিত ছিলেন বলে মর্গে থেকে জানা যায়।

এ ঘটনায় সাংবাদিকদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, আলালের লাশ নিয়ে কেন এতো লুকোচুরি? কেন তারা তথ্য দিচ্ছেন না? 

রোববার (১৮ জুন) দুপুরের দিকে আলালের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শুরু করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক। এক ঘণ্টার মধ্যে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ জুন এক নারীকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে আলাল পলাতক ছিলেন। পরে আহত অবস্থায় তাকে আটকের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে হৃদ্‌রোগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

চিকিৎসক আরও বলেন, ডিবির ঊর্ধ্বতন দুইজন কর্মকর্তা এখানে এসেছিলেন। তারাও আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মৃতদেহের পায়ে ব্যান্ডেজ দেখা গেছে।

এদিকে মৃত আলালের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে সকাল থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা মর্গে অবস্থান করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিকাল সাড়ে চারটা বেজে গেলেও মরদেহের কোনো স্বজন বা কোন পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। এক পর্যায়ে গণমাধ্যম কর্মীরা একে একে সবাই হাসপাতাল মর্গ থেকে চলে যায়। সাংবাদিকরা যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই একটি ফ্রিজাব গাড়ি নিয়ে মর্গে উপস্থিত হন সিভিল ড্রেসের কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও মৃতের ভাই আব্দুল হান্নান দেওয়ান। এর আগেই ময়নাতদন্ত সম্পূর্ণ শেষে মরদেহের গোসলের পাশাপাশি মর্গেই কাফনের কাপড় পরানো হয়। পরে সেই গাড়িতে করে মরদেহ নিয়ে মর্গ ত্যাগ করে পুলিশ ও ভাই বলে পরিচয় দানকারী সেই ব্যক্তি।

সূত্র আরো জানায়, যেকোনো থানা থেকে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে এলেই, সেটা হত্যাকাণ্ড হোক বা অন্য কোনো কারণেই মৃত্যু হোক সরাসরি মর্গ সহকারীর কাছে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। তখন তারাই বিষয়টি ফরেনসিক বিভাগে অবগত করেন।

অথচ আলালের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন সরাসরি ফরেনসিক বিভাগে গিয়ে জমা দিয়েছে পুলিশ। আর ফরেনসিক বিভাগে জমা দিলেও বিষয়টি নিয়ে কেন এতো লুকোচুরি ওই সূত্র দাবি করেন।  

আরো জানা যান, ময়নাতদন্তের সময় অনেক সিভিল ড্রেসে পুলিশ মর্গে ঘোরাঘুরি করেছে। এছাড়া তার স্বজনদের দুই-একজন ছিলেন। কিন্তু তারা কেউ গণমাধ্যমের সামনে আসেননি বা তাদের আসতে দেওয়া হয়নি।

জানা যায়, রাজধানীর তুরাগে ফাতেমা আক্তার মুক্তা নামে এক নারী খুনের ঘটনায় ওই বাড়ির কেয়ারটেকার আলাল উদ্দিনকে (৫০) আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ১০ জুন আদালতকে জানিয়ে তাকে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখান থেকে শুক্রবার নেওয়া হয় জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে।  ওইদিন রাতেই ফোনে স্বজনদের জানানো হয় তিনি মারা গেছেন। পরে শনিবার রাতে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ। রোববার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এজেডএস/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।