পাথরঘাটা (বরগুনা): আর কদিন বাদেই ঈদুল আযহা। ইতোমধ্যেই জমতে শুরু করেছে হাট-বাজার।
বরগুনার পাথরঘাটায় ছড়িয়ে পড়েছে গবাদিপশুর (গরু) লাম্পি স্কিন রোগ। এ রোগে আক্রান্ত গরুর মুখমণ্ডল থেকে পা পর্যন্ত গোটা দেখা দেয়। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। প্রাথমিক অবস্থায় খামারি বা গৃহস্থরা রোগ নির্ণয় করতে পারেন না। ফলে রোগ নিরাময় হয় না। এ অবস্থায় গরু বিক্রি ও মাংস খাওয়া বিক্রেতা ও ক্রেতা, দুয়ের জন্যই শঙ্কার।
ঈদের মাত্র ৫ দিন বাকি থাকতেই পাথরঘাটার হাট-বাজারে ব্যাপকভাবে লাম্পি স্কিন ছড়িয়ে পড়ায় গৃহস্থ ও খামারিদের চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। উপজেলার এমন কোনো বাড়ি বা খামার নেই যেখানে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত গবাদিপশু নেই।
প্রতি বছরের মতো এবারও পাথরঘাটায় গরু-ছাগলের হাট বসেছে। হাটে কোরবানির পশু উঠলেও ক্রেতা কম। এ অবস্থায় লাম্পি স্কিনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিক্রেতাদের মাঝেও হতাশার ছাপ দেখা যাচ্ছে।
পাথরঘাটা পৌর শহরের পূর্ব বাজারের প্রধান হাট, উপজেলার মানিক খালী, কাকচিড়াসহ বেশ কয়েকটি বাজারে হাতেগোনা কিছু ক্রেতার উপস্থিতি দেখা গেছে। যারা হাটে আসছেন তারাই লাম্পি স্কিন রোগের কথা বলছেন। ক্রেতারা বলছেন, গত কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে গরুর রোগের কথা শুনছেন। এতে তাদের গরু কেনার ইচ্ছা ফুরিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সাংবাদিক নfজমুল হক সেলিম হাটে গিয়ে ফিরে এসেছেন। তিনি জানান, কয়েকজনের সঙ্গে ভাগে তিনি কোরবানি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রোগের কথা শুনে তার ভাগদাররা ইচ্ছে হারিয়েছেন। কোরবানির জন্য তিনি এখন খাসি কিনবেন।
পাথরঘাটার মানিকখলী গরুর হাটের বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, চারটা গরু নিয়ে তিনদিন হাটে আসলাম, বিক্রি করতে পারলাম না। সবাই গরুর রোগের কথা বলছে। এ হাল থাকলে কোরবানির বাজারে ধস নামবে।
নুরুল ইসলামের মতো বহু বিক্রেতা একই শঙ্কা করছেন। তাদের ভাষ্য, রোগ নিরাময় না হলে বা এ ব্যাপারে জনমনে আতঙ্ক থাকলে বিক্রি হবে না। বাজারে ধস নামবে।
পাথরঘাটা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. অরবিন্দ দাস বলেন, লাম্পি স্কিন এটি ছোঁয়াচে রোগ। এ রোগের প্রতিষেধক (ভ্যাক্সিন) আবিষ্কার হয়নি। আমরা গোট পক্সের ভ্যাক্সিন দিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি খামারি আর গৃহস্থদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ও গরু মশারির ভেতরে রাখতে পরামর্শ দিচ্ছি। তবে খামারি ও গৃহস্থদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতনতা-চিকিৎসা নিলেই সুস্থ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
এমজে