রাজশাহী: যেসব দেশ মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ করার জন্য দায়ী তাদের কাছ থেকে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিপূরণ আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে।
রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত এক অ্যাডভোকেসি সভায় এ দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) আয়োজনে ও দ্যা কার্টার সেন্টারের সহযোগিতায় হোটেল ওয়ারিশানে এ সভার আয়োজন করা হয়।
‘বাংলাদেশে তথ্য প্রাপ্তির অধিকারে নারীর অগ্রগতি’ প্রকল্পের অধীনে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, ন্যায় বিচার এবং সামাজিক জবাবদিহিতার লক্ষ্যে এই অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসিডি নির্বাহী পরিচালক সালীমা সারোয়ার এবং দ্যা কার্টার সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার রোকসানা আফরোজ অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
প্রকল্প সমন্বয়কারী সুব্রত কুমার পালের সঞ্চালনায় এতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং তথ্যে নারীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় সরকারি বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্টেকহোল্ডারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য তুলে ধরার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, ন্যায় বিচার নিশ্চিত এবং সামাজিক জবাবদিহিতার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। উপস্থাপনার পরিপ্রেক্ষিতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে নারীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করা গয়। যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা দুরূহ সেহেতু এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কথাও বলা হয় বৈঠকে, একই সঙ্গে সামাজিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতে জোর তাগিদ দেওয়া হয়।
আলোচক হিসেবে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. ফরহাদ হোসেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. এম এ কাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. শরিফুল হক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটসহ মূল বিষয় তুলে ধরেন। এবং বরেন্দ্র অঞ্চলের খরা মোকাবিলায় সবাইকে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
সভায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বরেন্দ্র অঞ্চল, এর ওপর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় যে বাজেট বরাদ্দ করা হয় তা বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় খুবই অপ্রতুল এবং খরচের স্বচ্ছতাও গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া নারীর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বৈষম্যমূলক প্রভাব সামাজিক উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে খর্ব করে। কার্যকর জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা তৈরিতে অবশ্যই লৈঙ্গিক বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান বৈঠকে।
সভায় আরও মতামত তুলে ধরেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোজদার হোসেন, রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. ইসমাঈল হক, দৈনিক সোনার দেশ সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, বাসস রাজশাহীর সিনিয়র রিপোর্টার ড. আইনুল হক, বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট শরীফ সুমন, বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সিনিয়র রিপোর্টার কাজী শাহেদ, দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মামুন অর রশিদ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামসুননাহার খাতুন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. কবির হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২২২ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
এসএস/আরএ