সিলেট: যুগে যুগে একটা শ্রেণি সব সময় মানুষে মানুষে বিভেদের চেষ্টা করেছে। এর একটাই কারণ- তা হলো শিক্ষার অভাব।
শনিবার (৫ আগস্ট) দিনব্যাপী সিলেট বিভাগে অনুষ্ঠিত নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তীতে ধর্মীয় সম্প্রীতি সুরক্ষায় আন্তঃধর্মীয় সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে এই সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রুরাল অ্যান্ড আরবান পুওর্স পার্টনার ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (রূপসা)। এতে সহায়তা করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আইআরআই)।
রূপসার নির্বাহী পরিচালক হিরণ্ময় মণ্ডলের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আইআরআই’র রেসিডেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ক্রেগ হ্যালস্টেড। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আইআরআই’র সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ।
এ সময় রাজনীতিবিদ, ধর্মীয়নেতা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রূপসা দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে এই সংলাপের আয়োজন করছে। ইতোমধ্যে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুরে এ ধরনের সভা করছে।
সংলাপে বক্তারা বলেন, মনে হতে পারে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি বজায় রয়েছে, আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতিও আছে। কিন্তু এখনো উগ্র ও সাম্প্রদায়িক শক্তি সক্রিয় আছে। মাঝে মাঝে তারা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য প্রান্তিক পর্যায়ে আরও বেশি করে কাজ করতে হবে।
সংলাপে প্যানেল আলোচক ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরের সভাপতি মাওলানা হাবিব আহম্মেদ শিহাব, জেলার সভাপতি মাওলানা মো. এহসান উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ পরিষদ সিলেট জেলার সভাপতি অমৃত রাম ভট্টাচার্য, সিলেট প্রেস বিটারিয়ান চার্জের জ্যেষ্ঠ পাস্টর রেভারেন্ড ফিলিপ বিশ্বাস, সিলেট বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ মহানাম বিক্ষু।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ধর্মীয় নেতারা দেশের সুনাগরিক। তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে ধর্মের বাণী যথাযথভাবে প্রচার করে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। দেশে শান্তি-সম্প্রীতি অব্যাহত রাখা গেলে উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে দেশ অনায়াসে পৌঁছে যাবে। এ সম্প্রীতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করতে সব ধর্মাবলম্বীর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে, দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরের সভাপতি মাওলানা হাবিব আহম্মেদ শিহাব বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতার অর্থ ধর্মহীনতা নয়। এর অর্থ সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা। এ নীতি আমাদের সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে শেখায়, মানবিক আচরণ করতে শেখায়। উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির কারণে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাকের মতো দেশ বিপন্ন হয়ে গেছে। তাই এদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। সংলাপ শেষে সবাইকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২৩
এনইউ/এসএম