শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের শিশুকানন কিন্ডারগার্টেনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় খান নিবিড়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তার স্বজন ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শরীয়তপুর শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
নিবিড়ের মা নিপা আক্তার বলেন, আমাদের বসত বাড়ির একটি ঘরে হত্যাকারী সিয়ামের পরিবার ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। তাদের বাড়ি পাবনার সিংগা এলাকায়। ভাড়াটিয়া হিসেবে সিয়ামের সঙ্গে নিবিড় মিশতো। তার সঙ্গে কোথাও গেলে সন্দেহ করতো না কেউ। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে আমার ছেলেকে হত্যা করবে, তা কখনো চিন্তাও করিনি। আমার ছেলে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, তিনজন আসামি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা বিচারকের কাছে নিবিড়কে হত্যার বিবরণ ও পরিকল্পনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। আরেক আসামি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। তার বিষয়ে তদন্ত চলছে। প্রয়োজনে পুনরায় তার রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হবে।
উল্লেখ্য, শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের খিলগাঁও এলাকার প্রবাসী মনির হোসেন খানের ছেলে স্কুলশিক্ষার্থী হৃদয় খান নিবিড়কে (১১) গত সোমবার (৩১ জুলাই) অপহরণের পর হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। তারপর তার মায়ের মুঠোফোনে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে এ ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চারজনকে আটক করে।
আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার (১ আগস্ট) ভোরে খিলগাঁও এলাকার মেসার্স খান ব্রিকসের পাশের একটি নির্জন স্থান থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিতে তিন আসামি জানান, মোটরসাইকেল কেনার টাকা জোগাতে হৃদয়কে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির পরিকল্পনা করে সিয়াম ও সহযোগীরা। সহযোগীদের নিয়ে অপহরণ করার পর নিবিড় চিৎকার করলে তাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়।
গত বুধবার (২ আগস্ট) শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হৃদয় খান নিবিড় হত্যার অভিযুক্ত শাওন চৌকিদার (২০), শাকিল গাজীকে (১৮) পাঁচদিন ও বয়স কম হওয়ায় এঘটনায় অভিযুক্ত এক কিশোরকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেওয়ায় সিয়ামকে (২০) রিমান্ড দেওয়া হয়নি। রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সিয়াম (২০), শাকিল গাজী (১৮) ও ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর। এ ঘটনার আরেক আসামি শাওন চৌকিদার (২০) এখনও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি। আসামিদের মধ্যে তিনজনকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে ও কিশোরকে গাজীপুরের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৩
এসএম