ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জাতীয় শোক দিবসে এমপির পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা, বেলকুচিতে উত্তেজনা

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
জাতীয় শোক দিবসে এমপির পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা, বেলকুচিতে উত্তেজনা

সিরাজগঞ্জ: জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট উপলক্ষে বুধবার (৯ আগস্ট) সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস।  

পরদিন (বৃহস্পতিবার) একই স্থানে ও একই সময়ে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ-সদস্য (এমপি) ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মমিন মন্ডল।

 

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণায় বেলকুচির রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। আশঙ্কা করা হচ্ছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের।

এর আগে গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন।

বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা শাহাদত হোসেন জানান, দলের সেক্রেটারি আশানুর বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন না সভাপতি এমপি আব্দুল মমিন মন্ডল। ফোনও রিসিভ করেন না। বেশিরভাগ কর্মসূচিতেই তিনি (এমপি) অনুপস্থিত থাকেন। সাধারণ সম্পাদক নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিটি কর্মসূচির আহ্বান করেন। দলীয় কার্যালয়ে বসে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ৯ আগস্ট কর্মসূচির ঘোষণা করেন আশানূর বিশ্বাস। পরদিন এমপি সাহেব তার অনুসারীদের নিয়ে বসে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

একই তথ্য ও অভিযোগ শোনা গেল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মির্জা শরিফুল ইসলামের মুখে।  

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি দলের অধিকাংশ কর্মসূচিতে সভাপতি এমপি মমিন মন্ডল অনুপস্থিত থাকেন। প্রোগ্রামগুলো দলের সাধারণ সম্পাদকই ঘোষণা করেন। এবারও তেমনটাই করেছেন। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক প্রোগ্রাম দেওয়ার পরদিন সভাপতি পাল্টা প্রোগ্রাম আহ্বান করেছেন। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আশানুর বিশ্বাস বলেন, দলের সভাপতি মমিন মন্ডল এমপি আমার ফোন রিসিভ করেন না, কথাও বলেন না। প্রোগ্রামেও অনুপস্থিত থাকেন। সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশ, শেখ কামালের জন্মদিন, বঙ্গমাতা শেখ
ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিনসহ বেশিরভাগ কর্মসূচিতেই তিনি অংশগ্রহণ করেননি। এ কারণে জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে সিনিয়র নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে আমি কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। দলের নেতারা অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে প্রধান অতিথি করার জন্য বলেন। সভাপতির জায়গায় ব্যানারে আব্দুল মমিন মন্ডল এমপির নামও রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু লতিফ বিশ্বাসের নাম দেখে এমপি পাল্টা সভা ডেকেছেন।

এ বিষয়ে এমপি মমিন মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।  

তার ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম সরকার বলেন, সভাপতির সঙ্গে কথা না বলে একক সিদ্ধান্তে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাধারণ সম্পাদক। দলের এমপি থাকতে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে প্রধান অতিথি করতে পারে না। তাই এমপি সাহেব ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা করে ১০ তারিখে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাশার জানান, ১৫ আগস্টের প্রোগ্রাম দলীয় বিষয়। এ বিষয়ে আমাদের মন্তব্য করার এখতিয়ার নেই। তবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যেটা করার আমরা সেটা করব।

বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএন) জাকিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।