ঢাকা: বহু আকাঙ্ক্ষিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম শ্রমজীবীদের প্রত্যাশা পুরণ করেনি বলে উল্লেখ করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে শ্রমজীবী মানুষের জন্য প্রকৃত সর্বজনীন করে তোলার জন্য বেসরকারি ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্কিমে অংশগ্রহণের শর্তাবলি পুনর্বিবেচনা এবং পেনশন কর্তৃপক্ষে ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধি যুক্ত করার দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, শ্রমজীবী মানুষের বহু আকাঙ্ক্ষিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমের কার্যক্রম আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। কিন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ঘোষিত বিধি শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করেনি। পেনশন স্কিমের বিধিতে বলা হয়েছে বেসরকারি খাতের কর্মচারীরা এ স্কিমে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে মাসিক প্রিমিয়ামের অর্ধেক কর্মচারী এবং অর্ধেক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের এ অংশগ্রহণকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি। কোনো প্রতিষ্ঠান এ প্রিমিয়াম প্রদান করতে অস্বীকার করলে বা কর্মচারীদের পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে নিরুৎসাহিত করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়নি। দেশের মোট শ্রমশক্তির ৮৫ শতাংশের বেশি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের নিয়মিত কাজ থাকে না, থাকে না নিয়মিত আয়, ফলে যাদের কাছে দৈনিক জীবিকার সংস্থান নিশ্চিত করায় দুরূহ তাদের কাছ থেকে কমপক্ষে ১০ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রিমিয়াম জমা হওয়ার প্রত্যাশা অতিকল্পনা বৈকি!
নেতারা আরো বলেন, পেনশন স্কিমের বিধিতে ১৮ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা জানি, আমাদের দেশের শিক্ষা ও কর্মব্যবস্থা অনুসারে সাধারণভাবে ১৮ বছর বয়সে কাজে যোগ দেওয়ার অবস্থা নেই অপরদিকে মানুষের গড় আয়ু যেখানে ৭২ বছরের উপরে এবং একটি বিশাল জনগোষ্ঠী যাদের সামাজিক সুরক্ষা বলয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রয়োজন তাদের বাদ দেওয়া হলো। বিবিএস এর পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে মোট কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৫৩ লাখ যার মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৭ কোটি ৩৪ লাখ অর্থাৎ শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা মোট কর্মক্ষম মানুষের প্রায় ৭০ শতাংশ। অথচ সেই শ্রমজীবী মানুষের সংগঠন ট্রেড ইউনিয়নের কোনো প্রতিনিধিকে গঠিত পেনশন স্কিম কর্তৃপক্ষে রাখা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাসিক সঞ্চয় স্কিমের আলোকে স্কিম গ্রহণ করে তাকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বলে চালিয়ে দিলে তা চূড়ান্ত অর্থে শ্রমজীবী মানুষদের হতাশ করবে।
নেতারা দাবি জানান, রাষ্ট্র সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বার্ধক্যে যেভাবে আর্থিক নিরাপত্তা দিচ্ছে। যারা শ্রম দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে বিকশিত করছে, সেই শ্রমজীবীদেরও বার্ধ্যকের সুরক্ষা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমজীবীদের মতামত ধারণ করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধিকে যুক্ত করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
আরকেআর/জেএইচ