ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এক্সপ্রেসওয়েতে বাস চলবে কবে, জানেন না চালকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস চলবে কবে, জানেন না চালকরা

ঢাকা: শনিবার খুলে গেছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দুয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা প্রান্তে এর উদ্বোধন করেন।

রোববার ভোর ৬টা থেকে সাধারণ মানুষের জন্য এই উড়াল সড়ক উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে, প্রথম দিনে উড়াল সড়কে গণপরিবহন দেখা যায়নি। এলিভেটেড এক্সপ্রেসও ছিল চাপমুক্ত।

রোববার (০৩ সেপ্টেম্বর) এক্সপ্রেসওয়ের ফার্মগেট প্রান্তে সরেজমিনে সকাল থেকে অপেক্ষা করে দুপুর পর্যন্ত এমন চিত্র দেখা গেছে। সেখানে দায়িত্বরত প্রকল্পের কয়েকজন কর্মী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, তারাও এখন পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েতে কোনো চাপ লক্ষ্য করেননি। সেই সাথে সকাল থেকে ছিল না বাস বা গণপরিবহনও।

এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যক্তিগত পরিবহন নিয়ে বিমানবন্দর এলাকা থেকে ফার্মগেট এসেছিলেন এরশাদুল ইসলাম। তার নিজের প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই এলাকায়। এক্সপ্রেসওয়ের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত আসতে সাধারণত সময় লাগে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা। আজ আমি ২০ মিনিটে এলাম। আরেকটু আগে হয়তো আসতে পারতাম যদি গতি বাড়িয়ে চালিয়ে আসতাম।

এক্সপ্রেসওয়েতে চড়ার অভিজ্ঞতা জানতে আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। প্রায় সবাই স্বস্তির কথা জানিয়েছেন। তবে, কেউ-কেউ টোলের পরিমাণ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।

এই সড়কে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের কম) এবং মিনি-ট্রাক (৩ টনের কম) ৮০ টাকা, মাঝারি আকারের ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) এবং ৬ চাকার বেশি বড় ট্রাককে যথাক্রমে ৩২০ টাকা এবং ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।

এদিকে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা-ফার্মগেট অংশে ১৬ বা তার বেশি আসন বিশিষ্ট সব বাস ও মিনিবাসকে দিতে হবে ১৬০ টাকা।

গণপরিবহন চালকরা যা বলছেন
রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট রুটে চলাচল করা ‘এয়ারপোর্ট-বঙ্গবন্ধু পরিবহন’—এর চালক আকমল বাংলানিউজকে বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আমাদের গাড়ি চলবে নাকি নিচ দিয়ে চলবে, তা এখনও মালিকপক্ষ জানায়নি। এসব বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। মালিকপক্ষ যেখান দিয়ে গাড়ি চালাতে বলবে, সেখান দিয়ে চালাব। আর যেহেতু এই সড়কে টোল আছে, তাই ভাড়া কত বাড়বে, আদৌ বাড়বে কি না, সেটা মালিকপক্ষই নির্ধারণ করবে।

এই সড়কে চলাচলকারী আরেক গণপরিবহন ‘বিকাশ পরিবহন’—এর চালক শরীফ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তো লোকাল গাড়ি চালাই। রাস্তা থেকে লোক তুলে, আবার রাস্তাতেই নামাতে হয়। এই সড়কে তো আর থামা যাবে না। আমাদের এই রাস্তা দিয়ে উঠলে পোষাবে না। আমরা নিচের রাস্তা দিয়েই যাব।

এক নজরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত বিস্তৃত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য হবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

এক্সপ্রেসওয়েটি তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধানে। মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠা-নামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র‍্যাম্প রয়েছে।

এই প্রকল্পে বিনিয়োগকারী কোম্পানি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড। এতে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার রয়েছে ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) শেয়ার ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

প্রকল্পটির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি। পর্যালোচনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ সালে। প্রকল্প সমাপ্তির সময়কাল ছিল জুলাই ২০১১ থেকে জুন ২০২৪ সাল পর্যন্ত।

প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং (ভিজিএফ) তহবিল দুই হাজার ৪১৩ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশ সরকার প্রদান করবে। চুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় এক যুগ পর শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) এটি চালু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩
এমকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।