ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিয়ের দাবিতে স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে প্রবাসীর স্ত্রীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩
বিয়ের দাবিতে স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে প্রবাসীর স্ত্রীর সংগৃহীত ছবি

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ডামুড্যার ইউনিয়নে বিয়ের দাবিতে আক্তার হোসেন নামে এক স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে দুই সন্তানের জননী এক প্রবাসীর স্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে বিয়ে না করায় বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই নারী।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চরপাতালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

আক্তার হোসেন ৫৫ নম্বর বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চরপাতালিয়া গ্রামের হাসান আলী মাস্টারের ছেলে।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। প্রায় আট মাস ধরে স্কুলশিক্ষক আক্তার হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও করে। এমনকি আমাকে ঢাকায় নিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে আক্তার।  

তিনি আরও জানান, আক্তার আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভোগ করেছে। এখবর জেনে আমার স্বামী ফোন করে বলেছে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি এখন স্বামীর বাড়ি, বাবার বাড়ি কোথাও যেতে পারি না। তাই আক্তার হোসেনের বাড়িতে এসেছি বিয়ের দাবিতে। হয় আমি আক্তারকে বিয়ে করব, নয়তো আক্তারের বাড়িতেই মরব। এই বাড়ি ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই আমার।  

এ ঘটনায় বিয়ের দাবিতে রোববার সকালে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চরপাতালিয়া গ্রামে স্কুল শিক্ষক আক্তার হোসেনের বাড়ি আসে ওঠে ওই নারী। তবে এসময় আক্তার বাড়িতে ছিল না। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে বসলেও সমাধান করতে পারেনি বলে জানা গেছে।

আক্তার হোসেনের মা ফাতেমা বেগম বলেন, আমি কিছুই জানি না। ওই মেয়ে আমার ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে দাবি করে বাড়িতে এসে উঠেছে। আমি ওই মেয়েকে বুঝিয়ে বলেছিলাম যে ঢাকায় যাও, গার্মেন্টসে কাজ করে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করো। কিন্তু আমার কথা সে শুনল না, আমার মানইজ্জত সব নষ্ট করে দিল। আমার ছেলে আক্তার হোসেন এখন কোথায় আছে, তা আমি জানি না।  

বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সে তিন দিনের ছুটি নিয়ে স্কুলে আসেনি। শিক্ষা অফিস থেকে জানতে পেলাম আক্তার হোসেন ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছে। যে ঘটনার কথা লোক মারফত জানতে পেরেছি, এমন কিছু ঘটে থাকলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়। একজন শিক্ষক এই কাজ করতে পারেন না।

ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা রতন বলেন, আক্তার হোসেন ও ওই নারীর বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছিলাম। মেয়ে ছেলেকে বিয়ে করবে কিন্তু ছেলে বিয়েতে রাজি না হওয়াতে আমরা সমাধান করতে পারিনি। এখন ওই নারী আক্তার হোসেনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করছেন।

ডামুড্যা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দীন বলেন, অসুস্থতা দেখিয়ে আক্তার হোসেন ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছেন। তার নামে নৈতিক স্খলনের একটি বিষয় জানতে পেরেছি। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর, প্রকৃত শিক্ষক এই ধরনের কাজ করতে পারেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।