শাবিপ্রবি (সিলেট): শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে (শাবিপ্রবি) সেশনজট মুক্ত রেখে শিক্ষার্থীরা ৪ বছরে স্নাতক পাস করে বের হওয়ার লক্ষ্যে নিয়মিত ক্লাস, যথাসময়ে পরীক্ষা ও ঠিক সময়ে (২ মাসের মধ্যে) ফলাফল প্রকাশ করতে শক্ত অবস্থানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি শ্রেণি কার্যক্রম, নিয়মিত ক্লাসে নেওয়া, পরীক্ষায় নম্বর দেওয়া, পড়ানোর দক্ষতা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর শিক্ষকদের মূল্যায়নের সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য তুলে ধরেন শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে (৪ বছর) পাস করে বের হোক, তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করুক। এরই লক্ষ্যে নিমমিত ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া, পরীক্ষার ২ মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগে নিয়মিত পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ হত না। ফলে সেশনজট তৈরি হত, তবে এখন আর সে সংকট নেই, আমি আসার পর তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।
পরীক্ষার পর ২ মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, প্রত্যেক বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ২ মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করতে। তবে মাঝে মধ্যে দেখা যায়, দুই-একজন শিক্ষক সঠিক সময়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে জমা না দেওয়ায় একটি ব্যাচের ফলাফল অনেকদিন ধরে আটকে থাকে, এটা খুবই দুঃখজনক। তাই এখন থেকে নিয়মিত ক্লাস, যথাসময়ে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে ঠিক সময়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। কেউ সুনির্দিষ্ট সময়ে উত্তরপত্র জমা দিতে না পারলে তাদের নাম একাডেমিক কাউন্সিলে উঠবে, পাশাপাশি অতিরিক্ত দিনের জন্য ২০ টাকা করে (দিন প্রতি) জরিমানা দিতে হবে শিক্ষকদের।
এখন থেকে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের মূল্যায়নের সুযোগ পাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতেন, এখন থেকে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের মূল্যায়ন করার সুযোগ পাবেন। শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নেন কি না? ঠিকভাবে পড়ায় কি না? শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আচরণ-সম্পর্ক, পরীক্ষায় নম্বর বিভাজন ইত্যাদি বিষয়ে মূল্যায়নের সুযোগ পাবেন। পরে তা পর্যবেক্ষণ করে বিভাগীয় প্রধানকে নোটিশ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে, তবে সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পরিচয় গোপন থাকবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় একটি জঙ্গিবাদমুক্ত, র্যাগিংমুক্ত, ধূমপানমুক্ত, ড্রপমুক্ত, সুশাসন ও শিক্ষার্থী বান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণার মান অনেক ভালো। গতবছর ৭শ -এর বেশি গবেষণাপত্র বিশ্বের প্রথম সারির জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নও এখন দৃশ্যমান। ছেলে-মেয়েদের জন্য ৬টি আবাসিক হল রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশিত সব হল হয়ে গেলে শতভাগ মেয়ে শিক্ষার্থী, ৮০ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবেন।
পরিশেষে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মূল্যায়নে দেশের দ্বিতীয় অবস্থানে আছে শাবিপ্রবি। আশা করি, সবার সহযোগিতায় আমরা আরও এগিয়ে যাব।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
এসআরএস