ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা

মিরাজ মাহবুব ইফতি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা পল্লবী এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি আমান উল্লাহ আমান

ঢাকা: রাজধানী পল্লবী এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি আমান উল্লাহ আমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী। গত ১৮ আগস্ট পল্লবী থানার সিরামিক রোডের টেকের বাড়ী বস্তিতে নিজ ঘরে ঘটনাটি ঘটান আমান।

তিনি ওই এলাকার পুলিশের ‘ফর্মা’ হিসেবেও পরিচিত।

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার নারী নিজেই আদালতের কাছে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে আমান উল্লাহ আমান (৫০), ইয়াকুব (৩২) ও অজ্ঞাত দুজনকে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী নিজের সৎ মা মোসা রিনাকেও (৪০) মামলার আসামি করেছেন।

মামলার কপি রয়েছে বাংলানিউজের কাছে। মামলার এজাহারে আসামিদের ‘খুবই হিংস্র’, ‘লম্পট’, ‘সন্ত্রাসী’, ‘মাদক ব্যবসায়ী’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘নারী নির্যাতনকারী’ , ‘ধর্ষণকারী’, ‘খারাপ ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী।

এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আসামিরা কোনো আইনকানুন তোয়াক্কা করে না। গায়ের জোরে করতে পারে না- এমন কোনো কাজ নেই। আসামিরা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করে জীবিকা নির্বাহ করে। রাতের বেলা (১৮ আগস্ট) আমাকে আমানের ঘরে নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও পিস্তল দেখিয়ে একজনের পর একজন জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তারা। এ ঘটনা কাউকে বললে বা থানা পুলিশ করলে আমাকে ও আমার স্বামীকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়।

ভুক্তভোগী এজাহারে বলেছেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। জ্ঞান ফিরলে তিনি তার ঘরে ফিরে আসেন। এ সময় আনুমানিক রাত তিনটা বাজছিল। তার দাবি, রাত ১২টা থেকে প্রায় তিনটা পর্যন্ত তাকে গণধর্ষণ করে আসামিরা।

আমার সৎ মা আগে থেকেই আমান ও অন্যান্য আসামির সঙ্গে পরিকল্পনা করে আমাকে তাদের হাতে তুলে দেন, বলেও এজাহারে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী।

আদালতের কাছে তিনি আরও দাবি করেন, ঘটনার ব্যাপারে পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে নানা ধরনের টালবাহানা করতে থাকেন। বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে ঘোরানো হয়। আমার স্বামী রাসেল জেলে ছিলেন। তিনি মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরলে তাকে ঘটনার ব্যাপারে জানানো হয়।

এরপরই মূলত ভুক্তভোগী আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছে বাংলানিউজ। তিনি বলেন, ‘আগস্ট মাসের ১৮ তারিখ আমার সাথে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। তারা বলেন কোর্টে গিয়ে মামলা করতে। আমার সাথে ধর্ষণের মতো ঘটে যাওয়া ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবার বিচার চাই। সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।

আপনি আপনার সৎ মাকে কেন আসামি করেছেন জানতে চাইলে ভুক্তভোগী বলেন, আমানের বাসায় আমার সৎ মাই নিয়ে গিয়েছিল ওই দিন রাতে। এ কারণেই মামলায় তার নাম দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পরপরই গা ঢাকা দিয়েছেন পল্লবী এলাকার সেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক আমান উল্লাহ আমান। ফলে ঘটনার ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যান্য আসামিদের খোঁজ না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, গণধর্ষণের ঘটনায় আমার কাছে কয়েকটি ফোন এসেছে। তবে এই ঘটনায় কোনো অভিযোগ বা কোর্ট থেকে কোনো কাগজ আমার কাছে আসেনি। আমার থানায়ও অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি। সিসিটিভি ফুটেজ আছে। ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে কে এসেছে আর কে আসেনি। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমানকেও আমি চিনি না। যদি সে অপরাধী হয়ে থাকে সে অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।