নওগাঁ: টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় আত্রাই নদীর ছয়টি স্থানে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বহু মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আত্রাই উপজেলার আত্রাই নদীর বলরামচক স্থানে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে কয়েকটি গ্রামে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়ি পানির স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে।
বলরামচক গ্রামের মোসলেমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, চোখের সামনে ভেসে গেছে বসতবাড়ি। বাড়ি থেকে কিছুই বের করতে পারেননি তারা। এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাঁধ ভেঙে পানির তোড়ে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি। এজন্য স্বামী-সন্তান নিয়ে ঠাঁই হয়েছে সড়কে।
সব হারিয়ে চোখে কেবলই অন্ধকার দেখছেন তারা। এ ধকল তারা কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন, এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মোসলেমার চোখে মুখে।
আত্রাই ছাড়াও বাঁধ ভাঙা পানির কবলে পড়েছে মহাদেবপুর-রানীনগর ও মান্দা উপজেলার প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে অসহায় দিন কাটছে এসব এলাকার জনগণকে। স্থানীয়দের তথ্য মতে, আত্রাই নদীর ছয়টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙেছে।
অন্যদিকে আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙেছে মহাদেবপুর উপজেলার একটি স্থানে এবং মান্দায় উপজেলার চারটি স্থানে। আর রাণীনগর উপজেলার নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙেছে দুটি স্থানে। এতে রাণীনগর-আত্রাই নান্দাইবাড়ি সড়কও ভেঙেছে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফসলের। তলিয়ে গেছে চলতি মৌসুমের ধান আর সবজির ক্ষেত। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।
বন্যা কবলিতরা বলছেন, বছরজুড়ে এসব বাঁধ মেরামতে কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি তাদের। কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই এমন পরিণতি। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে মেরামত করলে বন্যা থেকে রেহাই পাবেন তারা।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নওগাঁর ছোট যমুনা এবং আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফইজুর রহমান বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ক্রমাগত জেলার নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন বেশ কয়েকটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙেছে। সেগুলো মেরামত অব্যাহত আছে। এছাড়া যেসব স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩
এসআই