লালমনিরহাট: তিস্তা নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের সিকিমে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় উজানের ঢেউয়ে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বামতীরের জেলা লালমনিরহাটে বন্যা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৪৭ মিটার, যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার নিচে।
তবে গেল রাতে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে বামতীরের জেলা লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। তবে ভোর রাতে পানি কমতে শুরু করলে তিনটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বাকি দুই উপজেলায় পানিবন্দি রয়েছে কয়েকশত পরিবার। উজানে পানি প্রবাহ কমলে সন্ধ্যার মধ্যে পুরো জেলায় বন্যার উন্নতি ঘটবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জানা গেছে, তিস্তা নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতে প্রবল ভারী বর্ষণে সিকিম অঞ্চলের অধিকাংশ স্থান ডুবে যায়। ভারতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটনাও ঘটে। পানির চাপে সিকিমের একটি বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। যার চাপ পড়ে ভাটিতে থাকা বাংলাদেশ অংশে। ভারতের গজলডোবা বাঁধের ছেড়ে দেওয়া অতিরিক্ত পানি বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজে আঘাত হানে। ফলে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়।
বড় বন্যার আশংকায় তিস্তাপাড়ে মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। রাতভর তিস্তা নদী বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও আদিতমারী ও সদর উপজেলার বেশ কিছু পরিবার বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পানিবন্দি রয়েছে। উজানে পানি প্রবাহ কমে গেলে পুরো জেলায় বন্যার উন্নতি ঘটতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বাংলানিউজকে বলেন, উজানের ঢেউয়ে বুধবার রাতে তিস্তা নদী বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও সকালে নিচে নেমে এসেছে। ফলে বন্যার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বিকেলের মধ্যে আরও উন্নতি ঘটবে। উজানে পানি প্রবাহ বাড়লে ভাটিতেও বাড়তে পারে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যা বাংলানিউজকে বলেন, পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়ায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। রাতে পানিবন্দি হলেও সকালে মুক্তি পেয়েছে। ইতোমধ্যে পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ রয়েছে আরও ছয় হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার। যেকোনো দুর্যোগের জন্য ৪৫০ মে.টন চাল ও ১৩ লাখ নগদ টাকা মজুদ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২৩
এসআইএ