সিলেট: উন্নয়ন প্রকল্পের ধীরগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সিলেটের প্রায় সবগুলো প্রকল্প ধীরগতিতে চলছে। কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে।
শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ ১১ তম রাউন্ডের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
ড. মোমেন বলেন, আমাদের দেশে যেকোনো প্রকল্পের কাজ প্রকৌশলীরা সহজে শেষ করতে চান না। আমি জানি না, কেউ বলেন ‘দেরি করলে নাকি পয়সার পরিমাণ বাড়ে, তারা উপকৃত হন। অথচ জাপানিরা সময়ের আগে প্রকল্পের কাজ শেষ করে দেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-সিলেট ছয় লেন প্রকল্পের কাজ এখনো শুরুই হয়নি। অথচ ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, রাস্তা ভালো হলে সিলেট-শিলচর বাস সার্ভিস চালু করা যাবে। এতে এই অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। এই লক্ষ্যে ভারত সুন্দর বর্ডার তৈরি করেছে। কেবল আমরা পিছিয়ে রয়েছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, উন্নয়ন কাজে অনিয়মকারী প্রকল্প পরিচালকদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান চালুর জন্য সংসদে প্রস্তাব দিয়েছি। উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে শেষ না করলে চাকরি থেকে বরখাস্তের পাশাপাশি জড়িতদের জেলে পাঠানো উচিত।
উদাহরণ টানতে গিয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘আমাদের দেশের মতো দক্ষিণ কোরিয়াতেও প্রকল্প কাজ সব সময় বিলম্ব হতো। তখন সে দেশের প্রেসিডেন্ট একটা আইন করলেন, ‘যিনি প্রকল্প পরিচালক হবেন, যথাসময়ে কাজ শেষ করতে হবে।
তিনি বলেন, গৌহাটি-সিলেট-ঢাকা বিমান চলাচলের জন্য বিমান মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মাঝখানে বিমান মন্ত্রণালয় গৌহাটি টু ঢাকা চালুর কথা বলেছিল। আমরা দেখলাম গৌহাটি-সিলেট-ঢাকা হলে অর্থনৈতিকভাবে আরো কার্যকর হবে। আর সিলেটের এয়ারপোর্ট এখনো কাজ চলমান রয়েছে। এটা ইতোমধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কাজ ধীর গতিতে চলছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুদিনের অনুষ্ঠানে আমরা আলোচনা করেছি, যে পথে চলছি, সেটি বিচার করি ঠিক আছে কিনা।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোমেন বলেন, ভারতের আসাম ও শিলংয়ের সঙ্গে আমরা নিয়মিত সম্পর্কে জড়িয়ে আছি। আমাদের প্রয়োজন উন্নয়ন।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ভারতের রাজ্য পররাষ্ট্র ও শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সোনালি অধ্যায় রয়েছে। বিশেষ করে নেপালের সঙ্গে ভারতের গ্রিড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ সুবিধার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ভারত থেকে সোশ্যাল ইকোনোমিক্যালি বাংলাদেশ লাভবান হবে।
তিনি আরো বলেন, জি-২০ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ লাভবান হয়েছে। রেল, রোড, পানি ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ রয়েছে। আগরতলার সঙ্গে রেললিংক সংযোগ হবে। মোংলা সমুদ্র বন্দর সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরো লাভবান হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভারতের মেম্বার অব গভর্নমেন্ট কাউন্সিল শ্রী সুরেয়া দোভাল, ভারত পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ভিনসেন পালা, ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য স্বপন দাস গুপ্ত, সংসদ সদস্য ও ত্রিপুরার ডেপুটি স্পীকার রাম প্রসাদ পালা।
সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, বাংলাদেশের ভারতের হাইকমিশনার মি. প্রণয় ভার্মা ও বাংলাদেশের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২৩
এনইউ/এসআইএস