ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দুই সতিনের ‘ধস্তাধস্তিতে’ মৃত্যু নবজাতকের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৩
দুই সতিনের ‘ধস্তাধস্তিতে’ মৃত্যু নবজাতকের

পটুয়াখালী: বাউফল উপজেলায় দুই সতিনের ‘ধস্তাধস্তিতে’ ৭ দিন বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম জুবায়ের।

গত বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের জামালকাঠী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পরে পুলিশ নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

শনিবার (৭ অক্টোবর) স্থানীয়রা জানান, জামালকাঠী গ্রামের কাদের চৌধুরীর ছেলে জহিরুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে সম্প্রতি বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাটকাঠী গ্রামের শফি উদ্দিন তালুকদারের মেয়ে সুমা আক্তারকে বিয়ে করেন। এক সপ্তাহ আগে সুমা আক্তার তার ছেলে সন্তান প্রসব করেন। এরপর থেকে সুমা আক্তার ও তার সন্তানের খোঁজ খবর নেওয়া বন্ধ করে দেন জহিরুল।

বৃহস্পতিবার সকালে সুমা আক্তার তার ৭দিন বয়সী সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি এসে জানতে পারেন জহিরুল ইসলাম আগেও একটি বিয়ে করেছেন। এ সময় সুমা স্বামীর ঘরে অবস্থান নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন জহিরুলের প্রথম স্ত্রী শাবনাজ। সুমাকে সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সুমা রাজী না হওয়ায় প্রায় সারাদিন শাবনাজ তার সঙ্গে ঝগড়া করেন।

সন্ধ্যায় শাবনাজ জোর করে সুমাকে তার সন্তানসহ ঘর থেকে বের করে দিকে উদ্যত হন। এ সময় দুই সতীনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় জুবায়ের সুমার কোলে ছিল। এক পর্যায়ে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এটি দেখে তাকে দ্রুত কালিশুরী বাজারের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক জুবায়েরকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জুবায়েরের মরদেহ উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

জুবায়েরের মা সুমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, জহিরুল ইসলাম আমাকে অনেক আগেই বিয়ে করে আত্মীয় স্বজনদের কাছে গোপন রেখেছেন। আমি অসুস্থ হওয়ার পর আমার স্বামী চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে ফোন করে আমাকে নিজের মতো করে চিকিৎসা নিতে বলেন। তিনি তাবলীগে যাচ্ছে। প্রয়োজনে ফোন করে খোঁজ-খবর নেবেন বলে জানান।

আমার সন্তান জন্মের পর আমি তাকে ফোন করি। বলি, আমাদের সন্তান অসুস্থ; তুমি একটু আসো। এরপরই জহিরুল সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। নিরুপায় হয়ে আমি স্বামীর বাড়ি চলে আসি। কিন্তু তার প্রথম স্ত্রী শাবনাজ ধস্তাধস্তি করে আমার সন্তানকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।

এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাবনাজ। তিনি বলেন, ছেলেটা ৭ মাসে ভূমিষ্ঠ হয়েছে; পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে এসে এখন আমাকে ফাঁসানোর পায়তারা চলছে।

ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বলেন, এ রকম একটি খবর শুনে ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে শুনি পুলিশ এসে নবজাতকের লাশ নিয়ে গেছে। বাকি খবর তিনি জানেন না বলেও জানান।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, জুবায়ের নামে একটি শিশু মারা গেছে। কেন তার মৃত্যু হয়েছে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।