ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রেলপথ উদ্বোধন

নতুন দিগন্তের অপেক্ষায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২৩
নতুন দিগন্তের অপেক্ষায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ

ফরিদপুর: প্রধানমন্ত্রীর রেল সংযোগ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ ফরিদপুরের মানুষের বহুল আকাঙ্ক্ষিত ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলাচলের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

নতুন রেল সংযোগ নিয়ে ফরিদপুরবাসীর মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। এ অঞ্চলের মানুষ ট্রেনে চড়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে। একই সঙ্গে খুলছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ভাগ্যের চাকা।

জানা গেছে, আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ উদ্বোধন করতে ট্রেনে চড়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ভাঙ্গা উপজেলা সদরের কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়াম মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় দুপুর ২টার দিকে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান জানান, ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-ভাঙ্গা রেল চলাচলের উদ্বোধন করবেন। এরপর দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ রেলপথ বাণিজ্যিকভাবে খুলে দেওয়া হবে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে।

ঢাকা-ভাঙ্গা পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে আমরা এই রেল সড়কে যাত্রীবাহী ট্রেন ও পণ্যবাহী ট্রেনের গতি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য সরকার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ২০১৬ সালে অনুমোদন করে। প্রকল্পের আওতায় ১৭২ কিলোমিটার পথ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যেই ঢাকা থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ এখন ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া বলেন, ঈদসহ প্রতিটা উৎসবে ঢাকা থেকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে আসতে মানুষের প্রচুর কষ্ট হতো। রেলসেবার ফলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে।

মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফয়েজ শাহ নেওয়াজ এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশ স্বাধীন যেমন স্বপ্নের ছিল, ঠিক তেমনি পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য ট্রেন চলাচল করবে এটাও একটা স্বপ্নের মতো ছিল। সরকারের ঐকান্তিক চেষ্টায় আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।

ফরিদপুর চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মো. নজরুল ইসলাম ট্রেন যোগাযোগের নতুন মাত্রা প্রসঙ্গে বলেন, ফরিদপুরের পাটকল, পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা স্বল্প সময়ে মধ্যে পণ্যগুলো রাজধানীতে নিতে পারবে। এটা একটা বিরাট ব্যাপার। সরকারের আন্তরিকতা ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ বলেন, দীর্ঘদিনের অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বার উন্মোচন হবে রেল সংযোগের মধ্যে দিয়ে। মানুষের জীবনমানের যেমন পরিবর্তন হবে, তেমনি এখানকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি করবে। এতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবকয়টি সংসদীয় আসন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবে বলে আমি মনে করি।

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের সভাপতি শামীম হক জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফর নির্বিঘ্ন করতে জেলা ও উপজেলা আ.লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক আনন্দ বিরাজ করছে। পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য সৃষ্টি। সেই সেতুর রেললাইন উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন তিনি। এটা আমাদের জন্য গর্বের। এ রেললাইন উদ্বোধন হলে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও নির্বিঘ্ন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।