নয়াদিল্লি থেকে: সম্প্রতি ভারতের ভিসা পেতে বাংলাদেশিদের সময়ক্ষেপণসহ যে সমস্যা হচ্ছে তা শিগগির কেটে যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) নয়াদিল্লিতে সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তারা এ কথা জানান।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী, যুগ্ম-সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) স্মিতা পান্ত, পরিচালক (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) নবনীতা চক্রবর্তী প্রমুখ।
ভিসা পেতে দীর্ঘসূত্রতাসহ বিভিন্ন জটিলতা সম্পর্কে এক প্রশ্নের স্মিতা পান্ত বলেন, গত বছর ভারত ১৬ লাখ বাংলাদেশির ভিসা ইস্যু করেছে। সম্প্রতি ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সাময়িক। শিগগির এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু প্রক্রিয়াগত কারণে ভিসার ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আপনারা ভ্রমণ করলে ভারতই লাভবান হয়। সুতরাং এ সমস্যা কেটে যাবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ভিসামুক্ত চলাচল চালুর প্রস্তাব সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তারা এ বিষয়ে অবগত।
নিরাপত্তা, যোগাযোগ এবং উন্নয়ন সহায়তার মতো খাতগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের অগ্রগতি তুলে ধরে স্মিতা পান্ত বলেন, গত সাত-আট বছর নতুন মাত্রায় এগোচ্ছে। হয়তো কখনো একটু ধীর কখনো দ্রুত গতিতে এগিয়েছে, কিন্তু এগিয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪৬টি প্রকল্প চলমান। এছাড়া ৬৪টি ক্ষুদ্র বিনিয়োগও আছে।
দুই দেশের যোগাযোগ খাতে ভারত বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে উল্লেখ করে তিনি জানান, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ, ত্রিপুরার সঙ্গে রেল ও নদীপথের যোগাযোগ উল্লেখযোগ্য। সবশেষ দুই বছর উন্নয়ন খাতে ভারত অনেক কাজ করেছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের শেকড় অনেক গভীরে প্রোথিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইভেন দ্য স্কাই ইজ নট দ্য লিমিট ইন দিস রিলেশনশিপ (এমনকি আকাশও এই সম্পর্কের সীমারেখা নয়)।
কোভিড-১৯ মহামারিকালেও বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন সহায়তা কার্যক্রম থেমে থাকেনি বলে জানান তিনি। স্মিতা পান্ত তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়ার পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
এই কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক কীভাবে আরও সহজ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছে ভারত। ভারতে আসার জন্য এখন ডলার আনার দরকার নেই। টাকা-রুপি কার্ড চালু হয়ে গেলে ভ্রমণকারীরা ক্যাশলেস লেনদেন করতে পারবেন।
তিনি জানান, ভারত এখন নিত্যনতুন উদ্ভাবন, সবুজ জ্বালানি প্রযুক্তি প্রভৃতি দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারত স্কলারশিপ ভবিষ্যতে আরও বাড়াবে বলে জানান স্মিতা পান্ত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে এখন উন্নয়ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশ সেখানেও বিনিয়োগ করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
এমএম