বরিশাল: স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৫ আওয়ামী লীগ নেতার নামে মামলা দায়ের করেছেন অপর এক আওয়ামী লীগ নেতা।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বাদী বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি এলাকার বাসিন্দা উত্তম কুমার দাস। পাশাপাশি তিনি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য বলেও এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন- বানরীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত লাল কুণ্ডু, সহ-সভাপতি মোস্তফা সর্দার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হুদা, মামুনুর রশিদ স্বপন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যনির্বাহীর সভা করে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থানীয় সংসদ সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. শাহে আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু অভিযুক্তরা বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকলাপকে ক্ষতিগ্রস্ত, হেয়-প্রতিপন্ন ও প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মামলার বাদীসহ পাঁচজনের স্বাক্ষর জাল করে অপরাধ করেন।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, এমপি শাহে আলমের বিরুদ্ধে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ নামায় তিনি (বাদী) ও মামলার পাঁচজন সাক্ষী স্বাক্ষর দেননি। অথচ সেখানে তাদের জাল স্বাক্ষর আছে।
মামলার পাঁচজন সাক্ষী হলেন- বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ, কোশাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম শান্ত, সদস্য সেলিম সর্দার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খাঁ ও মিজানুর রহমান মিঠু।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. মামুন অর রশীদ বলেন, বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির কিছু সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে একটা প্রতিবাদ গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ দিলে, আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে আদেশ দেন।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শাহে আলমের পক্ষে একটি লেখায় স্বাক্ষর জাল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কমিটির অপর চার সদস্য। তাতে বলা হয়েছে অভিযোগকারীদের স্বাক্ষর জাল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রচার করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। তাই অভিযোগকারী চার আওয়ামী লীগ নেতা স্বাক্ষর জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই অভিযোগ পত্রে।
এদিকে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হুদার বিরুদ্ধে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল ঘরামী। এ বিষয়ে তিনিও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আর এসব অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস।
উল্লেখ্য, ১৭টি বিভিন্ন অভিযোগের কথা তুলে ধরে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. শাহে আলমকে সম্প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। এরপর বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ায় মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। এরপরই শাহে আলমের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে ওঠেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৩
এমএস/এফআর