ঢাকা: আজ ( বুধবার) উদ্বোধন হতে যাচ্ছে খুলনা থেকে মোংলা এবং আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যৌথভাবে প্রকল্প দুটির উদ্বোধন করবেন।
বেলা ১১টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করবেন তারা।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা হলেও সরাসরি ছিল না রেলযোগ। দ্রুততম সময়ে এবং কম খরচে পণ্য পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে এ রেলপথ উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে। একইসঙ্গে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের উদ্বোধন হওয়ায় রাজধানীতে অতি সহজেই পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে ভারত, নেপাল ও ভূটান যে বাংলাদেশের মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সেটার পণ্য পরিবহনও হবে এ রেলপথে।
এ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, বুধবার ১১ টায় এই রেলপথের উদ্বোধন হবে।
তবে কবে থেকে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলবে তা এখনো জানাতে পারেনি তিনি। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে জানানো হবে বলে জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সরকার খুলনা-মোংলা রেলসংযোগ প্রকল্পের প্রথম ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বরে আর ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি শেষ হবে।
কিন্তু কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় প্রথম দফায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বর, পরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। মোট পঞ্চম ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধরা হয়েছে। আর ৫ দফা মেয়াদ বাড়ায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে সংযোগ ঘটছে বাংলাদেশ রেলওয়ের
খুলনা-মোংলা রেলপথের মতো আগামীকাল বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন আখাউড়া- আগরতলা রেলপথও। এর মধ্যে দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের ৭ রাজ্যের সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপিত হচ্ছে।
এই রেলপথটি চালু হওয়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বের ৭ রাজ্যের বাণিজ্যের পরিধি বিস্তৃত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বর্তমানে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া পণ্য আগরতলা থেকে সড়কপথে সরবরাহ হয় পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে, যেটা এখন স্বল্প খরচে রেলপথের মাধ্যমে হবে।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কেবল বাংলাদেশের রেল সংযোগ ছিল। একইসঙ্গে আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে ভারতের অভ্যন্তরীণ রেল সংযোগে আসতে যাচ্ছে বিপ্লব।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে কলকাতার সঙ্গে আগরতলার দূরত্ব কমছে প্রায় ১১০০ কিলোমিটার। প্রথমে এই রেলপথে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করলেও কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও।
প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, ১ নভেম্বর দুদেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এ রেলপথ চালু হলে পণ্য পরিবহন সহজ হওয়ায় দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
এ রেলপথ দিয়ে দুদেশের মধ্যে প্রথমে পণ্যবাহী এবং পরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে দেড় বছর মেয়াদের এ রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রায় ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশ পড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার, বাকিটা ভারতীয় অংশে পড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২, নভেম্বর ১, ২০২৩
এনবি/এসএএইচ