ঢাকা: বিএনপি-জামায়াত এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর ডাকা চতুর্থ ধাপের অবরোধে রাজধানীতে যান চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক। দোকানপাট, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট, মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা, কল্যাণপুর, শেরে বাংলানগর ও গাবতলী ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সকাল ১০টা নাগাদ মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর, মিরপুর ১৩, মিরপুর ১১ মিরপুর ১ ও টেকনিক্যাল এলাকার সড়কে গণপরিবহন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক দেখা গেছে। গাবতলী থেকে নবীনগর, সাভার, ইপিজেড ও মানিকগঞ্জমুখী গাড়ি স্বাভাবিক সময়ের মতোই ছেড়ে গেছে। তবে যাত্রী তুলনামূলক কম ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চলাচল বেড়েছে।
মিরপুর ১০ নম্বরে দোকানদার রফিকুল ইসলামের পর্যবেক্ষণ, দুই দিনের অবরোধ হলে প্রথম দিনের সকালে গাড়ি কম চলাচল করে, দোকানে কাস্টমারও কম থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। অবরোধের দ্বিতীয় দিন বেলা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি পুরোপুরো স্বাভাবিক হয়ে যায়। আজকে তাই হচ্ছে।
১০ নম্বর গোলচত্বরে দেখা যায় প্রতিদিনের মতো লোকাল গাড়িগুলো জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তা সচল রাখতে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। আশেপাশের সব দোকান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খুলেছে। মিরপুর ২ নম্বরের আশেপাশের সব দোকান, মিরপুর ১ নম্বর ও এর আশেপাশের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমার অফিস সবই খুলেছে।
মিরপুর ১০ নম্বরে সোনালী ব্যাংক শাখা, ডাচ বাংলা ব্যাংক শাখা ও ব্র্যাক ব্যাংক শাখায় দেখা যায় অন্যান্য দিনের মতোই মানুষের উপস্থিতি।
সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক মোহাম্মদ ইমরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, হরতাল-অবরোধ হলেও তো প্রয়োজন আটকে রাখা যায় না। টাকা তোলার জন্য এসেছি। আর সেই অর্থে তো অবরোধ নেই। বাস চলছে, অটোরিকশা চলছে, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলছে, রিকশ-ভ্যান সবই তো চলছে। আসা যাওয়াতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার কাজী ইকরামুল্লা বলেন, অবরোধে ব্যাংকের লেনদেনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ব্যাংকে লেনদেন আগের মতোই স্বাভাবিক আছে।
বিএনপি-জামায়াতের চতুর্থ ধাপের অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গাবতলী থেকে দূরপাল্লার গাড়ি দুই-একটি করে ছেড়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রী কম। অধিকাংশ বাস টার্মিনাল, তেলের পাম্প ও নিজস্ব ফাঁকা জায়গায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
গাবতলীতে শ্যামলী কোচ কাউন্টারের কাউন্টার মাস্টার পার্থ বাংলানিউজকে বলেন, যাত্রী দুই একজন আসছে, বেশি না। গাড়ি ছাড়া হচ্ছে না। সন্ধ্যায় যাত্রী হলে রাত্রে উত্তরবঙ্গ ও পশ্চিমাঞ্চলে ৬/৭টি গাড়ি ছাড়বে। তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি, দুপুরে সিদ্ধান্ত হবে গাবতলী থেকে রাতে কতগুলো গাড়ি ছেড়ে যাবে।
মাগুরার উদ্দেশে রোজিনা রয়্যালসের একটি কোচ ছেড়ে যেতে প্রস্তুত। যাত্রীদের আনগোনা দেখা যাচ্ছে। রোজিনা রয়্যালসের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন জানান, তাদের গাড়ি ছাড়ার জন্য প্রস্তুত আছে। বেশ কয়েকজন শ্রমিক মাগুরাতে যাবেন। তাদের নিয়ে আমাদের একটি গাড়ি কিছুক্ষণের মধ্যে ছেড়ে যাবে। এর সঙ্গে নতুন যাত্রী পেলে তাদেরও আমরা মাগুরাতে পাঠাতে পারব।
কাউন্টারে অপেক্ষারত আব্দুল আলিম বলেন, কয়েকটি গাড়ির কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম তারা যাবে না। একটি কাউন্টার থেকে জানালো রোজিনা কোচ যাবে। এখানে এসে নিশ্চিত হয়েছি গাড়িটি ছেড়ে যাবে। অনিশ্চয়তা দূর হলো, জরুরি কাজে বাড়ি যাচ্ছি। সকাল থেকে ঘোরাঘুরির পর শেষ পর্যন্ত বাড়িতে যেতে পারছি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ