সিলেট: সিলেট রেল স্টেশনে আন্তঃনগর উপবন এক্সপেসের একটি কোচে আগুন লেগেছে। এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ট্রেনটি প্লাটফার্মের ৩ নম্বর লাইনে এনে দাঁড় করানোর কিছুক্ষণ পর ভেতরে ধোয়া উড়তে দেখা যায়। তখনো যাত্রীরা কেউ ট্রেনে ওঠেননি। তবে এ ঘটনার পর যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
সরেজমিন দেখা গেছে, ট্রেনের ভেতরে ১৭টি সিট পুড়ে গেছে। এসময় একটি সিট থেকে একটি কালো ব্যাগ ও দুটি জারিকেন (জার) উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ব্যবস্থাপক মো. নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রাত সোয়া ১১টায় ছেড়ে যায়। এ লক্ষ্যে আগে থেকেই ডক ইয়ার্ড থেকে এনে প্রস্তুত রাখা হয়। সে সময় একটি এসি কম্পার্টমেন্টে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ট্রেনের ‘খ’ কোচে আগুন লাগার পর অন্য কোচগুলো বিচ্ছিন্ন করে সরিয়ে নেওয়া হয়। এতে তখন ট্রেনে কোনো যাত্রী না ওঠায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে এটি নাশকতা কিনা, আপাতত কিছু বলা যাচ্ছে না।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে দমকল বাহিনী পৌঁছার আগে স্টেশনের কর্মচারী ও সাধারণ লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ সুপার শেখ শরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, উপবন ট্রেনে সরকারবিরোধী আন্দোলনে জড়িতরা আগুন দিয়ে থাকতে পারে। ঘটনার পর ওই কোচ থেকে দুটি থেকে খালি পাঁচ লিটার জারিকেন উদ্ধার করা হয়। যেগুলোতে হয়তো দুর্বৃত্তরা পেট্রোল নিয়ে এসেছিল।
উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) তোফায়েল আহমদ বলেন, আমার এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা না। বাইরে থেকে এসে দুর্বৃত্তরা ট্রেনে আগুন দিয়ে থাকতে পারে।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার ইলিয়াস শরীফ বলেন, এখনো পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, এটা নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাসের রূপ, আমরা বলব। একটি রাজনৈতিক দল হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতার চেষ্টা করছে। রেল আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ, এটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। জনগণকে হয়রানি করেছে। আমরা তাদের দ্রুত ধরে আইনের আওতায় আনব। এটা চোরাগুপ্তা হামলা। রেলওয়ে স্টেশনের একটি দিকে কমফোর্ট জোন পেয়েছে, সেই সুযোগে তারা ট্রেনে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়েছে। অবশ্যই কয়েকদিনের মধ্যে তাদের আমরা খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে অভিযানের পাশাপাশি রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় টহলও জোরদার করব।
ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর টিটক শিকদার বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের দুটি ইউনিট কাজ করেছে। তবে এসি বিস্ফোরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এসি থেকে আগুন ধরার কোনো আলামত মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে, ভেতরে কেউ আগুন দিয়েছে। তবে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
রাত সোয়া ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস সিলেট ছেড়ে যায়নি। সে সময় ট্রেনে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনার জন্য আসা যাত্রীরা অপেক্ষমাণ ছিলেন। ট্রেনটি বিলম্বে হলেও অন্য কোচগুলো নিয়ে ছেড়ে যাবে এবং ওই কোচের পরিবর্তে আরেকটি কোচ সংযোগ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
এনইউ/এসআই