সিলেট: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশিরা খামাখা অনেক সময় ত্যক্ত করে। তারা যদি ভালো উপদেশ দেয় আমরা গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, ভয় পাবেন না, আমরা বিজয়ীর জাতি। একাত্তর সালেও আমাদের সঙ্গে অনেকে ছিলেন না, কিন্তু আমরা প্রমাণ করেছি, যে আমরা বিজয়ীর জাতি। তাদের সাহায্যের প্রয়োজন নেই।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) মাজার মসজিদে জুমার নামাজ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা খুব বাস্তববাদী সরকার। তারা একাত্তর সালে আমাদের সঙ্গে ছিল না। তবে ১৬ ডিসেম্বরের পর যখন জাতিসংঘের সদস্য পদের জন্য প্রস্তাব করি, তারপর আমেরিকা আমাদের সে প্রস্তাবে ১৫ বার সমর্থন দিয়েছে। অথচ চীনসহ অনেক দেশ ভেটো দিয়েছে। কিন্তু আমেরিকা দেখে যে বাংলাদেশ হয়ে গেছে, তারা বিশ্বাস করে রিয়্যালিটিতে। যখন সত্যি সত্যি বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে, সুন্দর সরকার এসেছে, আমাদের তারা সাপোর্ট দিয়েছে। এবারও তাই হবে, তারা আমাদের সাপোর্ট দেবে।
নির্বাচন সম্পর্কে মোমেন বলেন, দেশের অবস্থা খুব ভালো। দেশে নির্বাচনের জোয়ার বইছে। সব শ্রেণি-পেশার লোক একপায়ে দাঁড়িয়ে ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে ইচ্ছা তাকে দেবো’-নীতিতে। এটা আমরা বিশ্বাস করি। দেশে একটা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হবে।
নির্বাচনে দলে দলে পরিবার-পরিজন নিয়ে নিশ্চিন্তে ভোট দিতে, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন।
ড. মোমেন বলেন, শেখ হাসিনার সরকার বছরের পর বছর মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করেছে। আমরা ১৫ বছর অনেক ভালো কাজ করেছি। এবার আমাদের পরীক্ষা। আমরা আশা করি আপনারা আমাদের পরীক্ষায় পাস করাবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা বলেছিল, নির্বাচনে আসবে না। তারা এখন নির্বাচনের পথে। সব দল-মতের লোক নির্বাচনে আসুক। বিএনপিকেও বলবো, তোমরাও নির্বাচনে আসো। যদি জনগণের মঙ্গল করতে চাও, তোমরা জ্বালাও-পোড়াও বাদ দিয়ে নির্বাচনে আসো। তারা (বিএনপি) অল্প কয়েকদিনে ৩৭৮টি গাড়ি জ্বালিয়েছে, সাড়ে ৩শর মতো বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করেছে। ধ্বংস করে গাড়ি জ্বালিয়ে দেশের নেতৃত্ব দেওয়া যায় না।
এ অভ্যাস বাদ দিয়ে বিএনপিকে জাতির কাছে মাফ চেয়ে নাকে খত দেয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ভুল করেছেন স্বীকার করে নির্বাচনে আসেন। আমরা সাদরে আহ্বান জানাবো। দেশে আপনাদের কোনো সমর্থন আছে কি না, সেটা প্রমাণ করেন।
তিনি বলেন, আমেরিকাসহ দুনিয়ার সব দেশে নির্বাচনের আগে সরকার পদত্যাগ করে না। শেখ হাসিনার সরকারও বদ্ধপরিকর, একটা সুন্দর নির্বাচন দেওয়া। ২০০১ সালেও শেখ হাসিনা নিয়মমাফিক ক্ষমতা হস্তান্তর করে আদর্শ সৃষ্টি করেছেন। কারণ এ দেশটা শেখ হাসিনা ও তার বাবা তৈরি করেছেন। এ দেশের কোনো অমঙ্গল হোক শেখ হাসিনা কিংবা আমরা চাই না।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নয়াদিল্লি সফর নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্রের সঙ্গে অনেক ধরনের সমস্যা থাকে, সে ছোটখাটো সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ সভা না। তাদের (ভারতকে) বলবো, একটা সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা দরকার সব করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বক্স তৈরি করেছি। বিএনপির মতো যেন বেহুদা ভুয়া ভোটার না হয়, সে জন্য নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করেছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমরা একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করেছি।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সিলেট আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ