রাজশাহী: বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজশাহী মহানগরীর ২৭নং ওয়ার্ড কার্যালয় এলাকায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরপন্থি ও বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতার পক্ষের লোকজনের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষ, গোলাগুলি এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি।
এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মীকে রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
সালিশি বৈঠকে বিতর্কের জের ধরেই ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান ও বহিষ্কৃত মহানগর ছাত্রলীগ নেতা তারিকুল ইসলামের পক্ষের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ বেধেছিল বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর বালিয়াপুকুর এলাকায় থাকা ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় এলাকায় এই সংঘর্ষ ঘটে।
এই ঘটনায় একরামুল হক গুড্ডু (৩৫) নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মী একরামুল হক গুড্ডু মহানগরীর ১৯নং ওয়ার্ডের ছোট বনগ্রাম এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
রাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জরুরি অস্ত্রোপচার শেষে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান বালিয়া পুকুর এলাকায় তার কার্যালয়ে একটি সালিশ করেন। ওই সালিশে কাউন্সিলরের কোনো একটি কথাকে কেন্দ্র করে মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ:সম্পাদক তরিক, সনেট, আদর ও ফয়সাল দলবল নিয়ে এসে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। এক পর্যায়ে কাউন্সিলরের পক্ষের লোকেরা সেখানে জড়ো হয়ে তাদেরকে ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে কাউন্সিলরপন্থি একরামুল হক গুড্ডুর ডান পায়ে গুলি লাগে। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক (ইমও) ডা. বিল্লাল হোসেন বলেন, রাতে একরামুল হক গুড্ডুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার ডান পায়ে গুলি ছিল। তাই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। জরুরি অস্ত্রোপচার শেষে তাকে রাতেই রামেক হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগরীর ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সালিশ চলাকালে একটি পক্ষ নেয় তরিক, সনেট, আদর ও ফয়সাল। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা দলবল নিয়ে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। এ সময় তাকে হত্যার হুমকি দিলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। এরপর তারা আগ্নেয়াস্ত্র বের করে গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গুড্ডু গুলিবিদ্ধ হন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন।
তরিক, সনেট, আদর ও ফয়সালকে এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত বলে দাবি করেন এই ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, মারামারি ও সংঘর্ষের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। আর এই ঘটনায় থানায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই মামলা দেয়নি।
কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
এসএস/এসএএইচ