ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিজয় দিবসে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে ব্যতিক্রমী আয়োজন 

অস্থায়ী সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩
বিজয় দিবসে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে ব্যতিক্রমী আয়োজন 

সুনামগঞ্জ: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সীমান্ত এলাকায় অবহেলিত ও স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে দিনভর ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদ্‌যাপন করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া আয়োজনে অংশগ্রহণ করে বসুন্ধরা গ্রুপের শুভসংঘ স্কুল পড়ুয়াসহ আদিবাসী ও ঝরে পড়া শিশুরা।

স্কুলটি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ভারত সীমান্ত ঘেঁষা বারেকটিলায় অবস্থিত।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিজয় দিবসে দিনভর ছেলে ও মেয়েদের দুই ভাগে ভাগ করে বিস্কুট দৌড়, দৌড়সহ নানা খেলাধুলার আয়োজন করে দিনটি উদ্‌যাপন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ঝরে পড়া শতাধিক শিশুরা।

জানা গেছে, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন ভারত সীমান্ত ঘেঁষে বারিকটিলার পাঁচশত পরিবারে আড়াই হাজার লোক বসবাস করে। কিন্তু বারেকটিলা ও এর আশেপাশে তিন বর্গকিলোমিটার এলাকায় কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এসব শিশুদের লেখাপড়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে চলতি বছরের আগস্ট মাস থেকে বসুন্ধরা শুভসংঘ বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টির প্রাক প্রাথমিক ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৯১ জন শিশু পড়ালেখা করছে। আজকে একশত শিশুদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। এবং এর আশপাশের শতাধিক ঝরে পড়া শিশুদের শিক্ষা উপকরণসহ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে বসুন্ধরা গ্রুপের শুভসংঘ।

স্কুলের মর্জিনা আক্তার ও  প্রেমিতা মারাক জানান, খেলায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এই স্কুলের শিশুদের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে দুপুরের খাবার ও কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামানসহ সংশ্লিষ্টরা।

স্কুলটির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সামাদুল মিয়া বলেন, বিজয় দিবসে খেলাধুলাসহ নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে খুব ভাল লাগছে। খেলার বিজয়ীদের পুরস্কার দিয়েছে। আজকে একটা কম্বল পেয়েছি।

একেই শ্রেণির ছাত্র জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি স্কুলে যেতাম না। এখন বারেকটিলায় বসুন্ধরা শুভসংঘের স্কুল চালু হওয়ায় এই স্কুলে পড়ি খুব ভাল লাগে। আজকে বিজয় দিবসে স্কুলে খুব মজা করেছি। এর আগে এমন অনুষ্ঠানে আগে যাই নাই। শীত যাতে না লাগে তাই একটা কম্বলও দিয়েছে।

একেই স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ছে রাফিশা বেগম সে জানান, আমি পড়তে চাই। বাড়ির পাশে এই স্কুল হওয়ায় পড়ার সুযোগ পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। বিজয় দিবসের এমন আয়োজন আরও হলে ভালো লাগতো।  

স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাত্র অভিভাবক আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ তারা স্কুল করে দেওয়ায় আমাদের শিশুরা পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে। আবার বিজয় দিবসে খেলাধুলা, খাবার ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয় এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করায় আমরা খুশি।  

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের মহতী উদ্যোগে বারেকটিলার শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। বিজয় দিবসে শিশুরা আনন্দ করতে পেরেছে।

শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান জানান, বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়ন ও শুভসংঘের পরিচালনায় এই প্রথম বিজয় দিবস উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে খেলাধুলা, পুরস্কার, খাবার ও কম্বল বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশনায় দেশে যেসব সুবিধা বঞ্চিত অঞ্চল আছে, যেখানে স্কুল নেই সেখানে বসুন্ধরা গ্রুপের শুভসংঘ স্কুল প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি। এর ধারাবাহিকতায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বারেকটিলায় একটি স্কুল করেছি।  

তিনি আরও জানান, এখানে আদিবাসীদের সন্তানসহ অনেক সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা লেখাপড়া করবে এমন কোনো স্কুল ছিল না। মাত্র একটি স্কুল ছিল সেটিও স্কুলটি বন্ধ ছিল। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে স্কুলটি নতুন করে চালু করেছি। শিশুরা লেখা পড়া করছে। এই বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৯১ জন শিশু লেখা পড়া করছে। জানুয়ারিতে শতাধিক ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করবে এবং স্কুলটি যাতে আরও বড় করা যায় বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সেই চেষ্টা করা হবে। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে শিশুদের বই, খাতা, কলম ও স্কুল ড্রেস, জুতো সব দেব।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।