মেহেরপুর: প্রতিবেশী নারীর ছাগল বলাৎকারের অভিযোগে সালিশ বৈঠকে করা জরিমানার ১৮ হাজার টাকা দিতে না পারায় গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ইঞ্জিনচালিত পাখি ভ্যানের চালক বাবলু শাহ (৫৬)।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে পুলিশ বাবলু শাহ'র মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ের দুজনের নামে মামলা হয়েছে।
বাবলু শাহ গাংনী পৌরসভার চৌগাছা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে দুপুরের দিকে তার বাড়ির পাশের মরঘাটি মাঠের একটি আম বাগান থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয় বাবলুর।
এ ঘটনায় বাবলুর ছেলে আখিরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বাবলুর মেয়ে উনজিলা খাতুন জানান, বাবা ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে পথচারীরা মরদেহ দেখে আমাদের বাড়িতে খবর দেন।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচদিন আগে বাবলু শাহ একই গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা নারী হালিমা খাতুন ওরফে হালে খাতুনের একটি ছাগলকে বলাৎকার করেন। এ ঘটনায় গত ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক হয়। গাংনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামিউল ইসলাম ও স্থানীয় মাতব্বর রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ও সালিশ বৈঠকে তার ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রাথমিকভাবে ওই জরিমানা মেনে নিলেও পরে সালিশ মানেন নি ছাগলের মালিক হালিমা খাতুন। এ ঘটনায় আবারও সালিশ হয়। দ্বিতীয় দফায় তাকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন কাউন্সিলর সামিউল ইসলাম। পরে বিশাল অঙ্কের জরিমানার টাকা দিতে না পেরে ভ্যানচালক বাবলু শাহ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
গাংনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামিউল ইসলাম বলেন, সালিশ বৈঠকের প্রথম দফায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু ছাগল মালিক হালিমা খাতুন তা মেনে না নেওয়ায় পরে বাবলু শাহকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ছাগল মালিক হালিমা খাতুন ও অপর এক ব্যক্তির নামে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
আরএ