সিরাজগঞ্জ: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ডা. আব্দুল আজিজ বিজয়ী হওয়ার পর থেকে তার আত্মীয়-স্বজনেরা তাণ্ডব চালিয়ে অন্তত ২০টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ওইসব পরিবারের লোকজনকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) জেলার তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের ভুক্তভোগী প্রামাণিক বংশের একাধিক সদস্য এসব অভিযোগ করেন।
সর্বশেষ রোববার সকালে লাবু নামে এক যুবককে মারধর করা হয়েছে। এর আগে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে কুন্দইল বাজারে গেলে কুতুব উদ্দিন প্রামাণিক (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন এমপি ডা. আজিজের মামাতো ভাইয়ের ছেলেরা।
কুন্দইল গ্রামের একাধিক ভুক্তভোগী জানান, নির্বাচনের দিন রাতে বিজয় মিছিল নিয়ে সগুনা ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাড়ির গেট ও আইয়ুব আলীর মিলঘর ভাঙচুর করে। এরপর থেকে প্রামাণিক গোষ্ঠীর কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না।
সাবেক চেয়ারম্যান ও এমপি ডা. আজিজের মামাতো ভাই আব্দুল্লাহেল বাকীর নেতৃত্বে প্রতিদিন রাতে ১০-১৫ জনের একটি দল স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থকদের বাড়ির আশপাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করে এবং হুমকি দেয়। নির্বাচনের পরদিন থেকে এনামুল, হামিদ মহুরী, কুতুব আলী লাবুসহ অন্তত ৫-৬ জনকে মারধর করা হয়েছে। অবরুদ্ধ হয়ে আছে আইয়ুব, আসাদ, মান্নান, সৈয়দ, শাহীন, ভুট্টো চেয়ারম্যান, বেল্লাল, মকুল ও আরিফসহ অন্তত কমপক্ষে ২০টি পরিবার। এসব পরিবারের লোকজন বাজারে বা রাস্তায় বের হতে পারছেন না। ভ্যান বা অটোরিকশাচালকরাও রাস্তায় নামতে পারছেন না।
চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল বাকীর নির্দেশে এমপি ডা. আজিজের মামা মঞ্জু, মামাতো ভাই, মামাতো ভাইয়ের ছেলেরা এসব তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
সগুনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লাবু প্রামাণিক বলেন, আমরাতো নৌকার কাজ করেছি, তারপরও রোববার সকালে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পেছন থেকে মারধর করে এমপি আত্মীয় মাহতাব, কলি, ফুল, হাসান, আরিফসহ ৭-৮ জন। যারা মারধর করেছেন, তারা বিএনপি থেকে আসা হাইব্রিড। অথচ আমরা সবাই আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হয়েও মারধরের শিকার হচ্ছি!
সগুনা ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, নির্বাচনের পর থেকে অনেক ঘটনাই ঘটেছে। আমি এসব বিষয়ে পরে কথা বলব।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক চেয়ারম্যান ও এমপি ডা. আব্দুল আজিজের মামাতো ভাই আব্দুল্লাহেল বাকী বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। লাবু ‘গাঁজার’ ব্যবসা করেন, এজন্য ছেলেপেলেরা তাকে মারধর করেছে। প্রামাণিক গোষ্ঠীর ওরা তো বাজারেই আসে না। ওরা বাজারে আসবে, কেউ তাদের মানাতো করেনি। ওরা ভয় পাবে কেন।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ পাঠাই, অভিযোগ দিতে বলি। কিন্তু তারা কোনো অভিযোগ দেননি। রোববার লাবু নামে একজনকে হাসপাতাল থেকে এসে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। এর আগে কুন্দইলে দুপক্ষের দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ এমপিকে তার মোবাইলফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪
এসআরএস