ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শের-ই-বাংলায় ঠাণ্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা দিতে হিমশিম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
শের-ই-বাংলায় ঠাণ্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা দিতে হিমশিম

বরিশাল: কখনও কনকনে শীত, আবার কখনও কিছুটা গরম অনুভূতি- এভাবেই গত কয়েকটা দিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে বৃদ্ধি পাচ্ছে নিউমোনিয়া, জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগ।

ফলে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভরসার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার অধিক রোগী ভর্তি হচ্ছে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের সেবা প্রদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতেও রোগীর সংখ্যা কম নয়।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে ভোলার বাসিন্দা চার বছর বয়সী শিশু আফসানা। তিনদিন আগে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আফসানার অভিভাবকরা জানান, শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু রোগীর সংখ্যা এত বেশি তারা আফসানার জন্য কোনো বেড পাননি। ফ্লোরে আফসানাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। সে আপাতত সুস্থ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি রোগী ভর্তি। যারা ভর্তি হয়েছে বা হচ্ছে সবারই প্রায় ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বেড বরাদ্দ আছে ৬৩টি। কিন্তু শিশু ওয়ার্ডসহ বিভাগের অধীনে ভর্তি আছে প্রায় তিনশ জনের বেশি। এছাড়া সংকটাপন্ন প্রায় শতাধিক শিশু আছে স্পেশাল কেয়ার নিওনাটাল ইউনিটে। আক্রান্তদের মধ্যে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের সংখ্যাই বেশি। শুধু ডায়রিয়া ওয়ার্ডেই শিশুর সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়ে গেছে।

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান উত্তম কুমার সাহা জানান, দুই ও তিনতলা ছাড়াও আরও কয়েকটি ইউনিট নিয়ে শিশু বিভাগ। এখানে ধারণক্ষমতার অন্তত প্রায় ৫ গুণ রোগী নিয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া রোগী, সংকটাপন্ন রোগী রয়েছে। বিভাগের একমাত্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হওয়ায় আশপাশের জেলা ও উপজেলা ছাড়াও বিভাগের বাইরে থেকেও প্রতিদিন এখানে শত শত রোগী আসে। ভর্তি রোগীর দ্বিগুণ রোগী প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা গেলে এই চাপ কিছুটা কমতে পারে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখানে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন রোগী আসছে। নিউমোনিয়া, জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগ নিয়ে শিশু ও বয়স্ক রোগী ভর্তি হচ্ছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে। আমাদের এ হাসপাতালটি বিভাগের বড় হলেও এর শয্যা সংখ্যা কম; আমরা তার পরেও এর ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৫ গুণ বেশি রোগীর সেবা দিতে বাধ্য হচ্ছি। নতুন ভবন তৈরি হয়ে গেলে আমাদের এ সমস্যা কেটে যাবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে মোট ৪১৫ জন ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩২ জন, বরিশাল জেলার অন্যান্য হাসপাতালগুলোয় ৭১ জন, পটুয়াখালী জেলায় ১১১ জন, ভোলা জেলায় ৯৯ জন, বরগুনা জেলায় ১৬ জন, ঝালকাঠি জেলায় ৫৩ জন ও পিরোজপুর জেলায় ৩৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। আর ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেশ কয়েকজনের জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।