ঢাকা: এডিস মশা নিধনে কর্মপরিকল্পনা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সে অনুযায়ী সব জেলা থেকে কর্মপরিকল্পনা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য এম. আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সব কথা জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় সারাদেশে মশা নিধনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধের লক্ষ্যে সিটি করপোরেশনসহ সারা দেশে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, ২০২১ সালে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়। এতে সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত সকল অংশীজনের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা এবং দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে জাতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী জেলা কমিটির জরুরি সভা আয়োজনসহ এডিস মশা নিধনে কর্মপরিকল্পনা নিতে সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সব জেলা থেকে কর্মপরিকল্পনা পাওয়া গেছে।
মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধবিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কমিটির সভায় কর্মপরিকল্পনাগুলো নিয়মিত আলোচনা করা হয়। জেলা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম পরিচালক বা উপ-পরিচালকরা (স্থানীয় সরকার) সমন্বয় ও মনিটরিং করেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, সারা দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে নেওয়া কার্যক্রম পর্যালোচনার লক্ষ্যে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধবিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা প্রতি দুই মাস অন্তর অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৭ জানুয়ারি কমিটির ২০২৪ সালের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের পরিচালকরা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
তিনি বলেন, সভায় দেশের সব ব্যাংক, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস ও আবাসিক এলাকা এবং এর চারপাশের পরিবেশ নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন, বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে সারা বছর পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সব সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি অফিস, আদালত, হাসপাতাল, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনা ও চারপাশের পরিবেশ নিজ উদ্যোগে বা প্রয়োজনে সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বরাবর ডিও পত্র পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান অর্থ-বছরে স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালন বাজেটের আওতায় ডেঙ্গু মোকাবিলা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও প্রচার খাতে সিটি করপোরেশনগুলোর অনুকূলে ৪০ কোটি টাকা এবং পৌরসভাসমূহের অনুকূলে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনা ও চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবার সময় মসজিদে ইমামদের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র যাতে তৈরি হতে না পারে, সেজন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ২০১৯ সাল থেকে সারাদেশে পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় বিভাগের মাধ্যমে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্ণিত কমিটি পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে গত বছরের ২৯ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ ২০২৩ পালন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
এসকে/আরএইচ