ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মিয়ানমারের আরও ৬৩ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪
মিয়ানমারের আরও ৬৩ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে

ঢাকা: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের চলমান সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) নতুন করে আরও ৬৩ জন সশস্ত্র সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৩২৭ জন মিয়ানমারের বিজিপি, সেনা কাস্টমস কর্মকর্তা ও অসামরিক নাগরিক দেশে এলেন।

বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে ৬৩ জন প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত ৩২৭ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনা সদস্য, কাস্টমস কর্মকর্তাসহ অসামরিক নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত পাওয়া খবরে বিজিবির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে আশা ১৮৩ বিজিপি সদস্যের মধ্যে তুমব্রু বিওপির ৭৬ জন, ঘুমধুমের ৩৭ জন ও বালুখালী এলাকার ৭০ জন ছিলেন।

মোট ২২৭ জন বিজিপি সদস্য কক্সবাজার বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধীনে আছেন। অন্যদিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং বিওপিতে আরও দুই বিজিপি সদস্য রয়েছেন।

বিজিবি জানায়, সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত টহল ও চেকপোস্ট বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোনো রোহিঙ্গাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশের স্বার্থে সীমান্তে সার্বক্ষণিক নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বিজিবি।

এর আগে, সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজিপির ১০৬ জন্য এবং রাত পর্যন্ত ১১৫ জন মিয়ানমার বিজিপি সদস্য পালিয়ে আসার তথ্য জানায় বিজিবি।

এদিকে মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে বান্দরবানে দুইজন নিহত হন। সোমবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউপির চার নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন ওই এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগম (৫২)। এছাড়া অপর নিহত রোহিঙ্গা পুরুষের (৫৫) পরিচয় জানা যায়নি।

গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে আরাকান আর্মিসহ কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী।

সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় জান্তার অনুগত সেনাদের পরাজয়ের খবর আসছে। এমনকি অনেক জায়গায় সেনাবাহিনীর ঘাঁটি ও নিয়ন্ত্রিত এলাকাও দখলে নিতে শুরু করেছেন বিদ্রোহীরা।

এ নিয়ে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে ০৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রথম দফায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেন বিজিপির ১৪ জন সদস্য। এরপর দফায় দফায় ওই সীমান্ত দিয়ে ঢুকতে থাকেন বিজিপির সদস্যরা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে তীব্র সংঘর্ষের মধ্যে সেখানে চাকমা সম্প্রদায়ের প্রায় চারশ জন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কিছু লোক জড়ো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান। এ অবস্থায় ওই চাকমা-রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অবশ্য সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ০৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে বলেছেন, মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতি খুবই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে সীমান্তে সশস্ত্র বাহিনীকে ধৈর্য ধরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৪
এসজেএ/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।