ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

করোনার পর থেকে কমছে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
করোনার পর থেকে কমছে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা মৌলভীবাজারের একটি এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: সারা দেশে একযোগে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৪।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দেশে ২০ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

সারা দেশের হিসাবে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে মৌলভীবাজারেও। এ জেলায় গত তিন বছরের ব্যবধানে কমেছে ৬ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী। এর পেছনে আছে নানা কারণ।

মৌলভীবাজার জেলায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রায় প্রতি বছর কমছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। শুধু পরীক্ষার্থীই নয়, পরীক্ষার্থীর সঙ্গে সঙ্গে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে জেলার মোট এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যাও।

এ বছর মোট ২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসেছে দাখিল পরীক্ষার্থীরা। এসব কেন্দ্রে মোট দাখিল পরীক্ষার্থী ৪ হাজার ১৮ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র আছেন ২ হাজার ১০৯ জন এবং ছাত্রী ১ হাজার ৯০৯ জন। দাখিলেও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা ৮০০ জন বেশি।

গত তিন বছরে মৌলভীবাজার জেলায় কমেছে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যাও। ২০২২ সালে জেলার মোট ৪১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৩ সালে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা একটি বেড়ে ৪২টি হয়। কিন্তু এ বছর পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমে এসে হয়েছে ২৫টি।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র বলছে, মৌলভীবাজারে এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন মোট ২৩ হাজার ৯৭২ পরীক্ষার্থী। আর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলার মোট ২৫টি কেন্দ্রে। তিন বছর আগে যা ছিল অনেক বেশি। ২০২২ সালে ৩০ হাজার ৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। সে বছর জেলায় মোট পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল ৪১টি।

২০২২ সালে জেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। এর কারণ হিসেবে করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত করোনার প্রকোপে বিপর্যস্ত সময় ছিল শিক্ষা খাতের জন্য। এই সময়ে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। ফলে কমেছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও।

মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, ২০২২-২৩ সালে মূলত করোনা পরিস্থিতিতে ঝরে পড়ার কারণে শিক্ষার্থী অনেকটাই কমে গেছে। করোনায় দীর্ঘসময় স্কুল বন্ধ থাকার পরে যখন খোলা হলো, তখন অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। এ কারণে এই তিন বছরে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তার প্রভাব এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় পড়েছে। আবার এ বছর টেস্ট পরীক্ষা কড়াকড়ি হওয়ায় কারণেও অনেক পরীক্ষার্থী বাদ পড়েছে।

মৌলভীবাজারে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় মোট ২৪ হাজার ৫৭৫ জন। এ বছর পরীক্ষা কেন্দ্র একটি বেড়ে ৪২টিতে দাঁড়ায়। তবে আগের বছরের তুলনায় কমে যায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। চলতি বছর সেই সংখ্যা থেকে কমেছে আরও ৫০৩ জন। অর্থাৎ গত তিন বছর ধরে মৌলভীবাজার জেলায় ধারাবাহিকভাবে কমছে মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী সংখ্যা।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মোট ২৩ হাজার ৯৭২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা এগিয়ে। শিক্ষা অফিসের তথ্য বলছে, এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র আছেন ৯ হাজার ৪৬৬ জন এবং ছাত্রী ১৪ হাজার ৫০৬ জন।

দ্য ফ্লাওয়ার্স কে জি অ্যান্ড হাই স্কুলের শিক্ষক রোকসানা আক্তার বলেন, আমার স্কুলের কথা বললে অনেক শিক্ষার্থীই বাবা-মায়ের সঙ্গে উন্নত বিশ্বে পাড়ি জমিয়েছে। এমন আরও অনেকেই আছে যারা বাবা-মায়ের সঙ্গে অন্য দেশে চলে যাচ্ছে। এটাও শিক্ষার্থী কমার একটি কারণ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
বিবিবি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।