ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খালের ওপর থাকা সব অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হবে: মেয়র আতিকুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪
খালের ওপর থাকা সব অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হবে: মেয়র আতিকুল

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খাল উচ্ছেদ ও পরিষ্কার অভিযানে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনসহ মোট তিনটি স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ সময় ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, খালের সীমানার ভেতরের সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হবে।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু হয়ে বিকেল পৌনে ৬টার দিকে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রামচন্দ্রপুর খালের ময়লা পরিষ্কার করা সম্পন্ন হয়।

বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবীরা সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা কাজ করার পর নামাজ ও দুপুরের খাবারের বিরতি দেয়। বিরতি শেষে ২টা ৩০ মিনিট থেকে পুনরায় কাজ শুরু করে বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে লক্ষ্য অনুযায়ী পুরো খালের পরিষ্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে। সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ডিএনসিসি মেয়র সেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে পরিষ্কার অভিযানে ছিলেন।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএনসিসিকে সহায়তা করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের দেড় হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী।

অভিযান শুরুর আগে, সকাল পৌনে ১০টার দিকে বছিলায় অবস্থিত পশ্চিমাঞ্চল পুলিশ লাইন মাঠে (বছিলা ট্রেনিং একাডেমি) ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবীদের শপথবাক্য পাঠ করান।

সকাল ১০টার দিকে রামচন্দ্রপুর খাল পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবীদের উৎসাহ দিতে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম হাতে গ্লাবস পরে নিজে খালে নেমে ময়লা পরিষ্কারের কাজ করেন। বেলা ১১টার দিকে রামচন্দ্রপুর ও লাউতলা খালের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হয়। প্রথমে খালের মোহনার জায়গা দখল করে বানানো একটি আধপাকা ও একটি পাকা স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় খালের পাড়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন ভাঙার কাজ।

ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা খালের সীমানা মেপে দেখেন নির্মাণাধীন ভবনটির ৭০ ভাগই খালের জায়গার ওপর বানানো হয়েছে। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনটির অবৈধ অংশ ডিএনসিসি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ছয়টি বিশেষ বুলডোজার ও এক্সেভেটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অবৈধ ভবন ভাঙার কাজ করা হয়।

খাল উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ময়লা ও দখলমুক্ত করে রাজধানীর খালগুলো আগের রূপে ফেরানো হবে। পরিবেশকে আমরা ধ্বংস করে ফেলেছি। পরিবেশ এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, রাস্তা ডুবে যায়। কারণ, খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে না। ময়লা ফেলে খালগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। খাল পুনরুদ্ধারে আমরা এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই।

মেয়র বলেন, এরআগে মিরপুর প্যারিস খাল, সূতিভোলা খালে অভিযান করেছি। গত দুইবছর আগে এই মোহাম্মদপুরেই লাউতলা খালে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে আমরা গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। সেখানে এখন সবুজায়ন হয়েছে৷ পাশেই বাউন্ডারি দেওয়াল দিয়ে একটি মাঠ নির্মাণ করে দিয়েছি। আজ রামচন্দ্রপুর খালে অভিযান শুরু করেছি। এটি প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল। খালের সীমানার ভেতরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, অবৈধ ভবন সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা কোনো বৈধ নোটিশ দেব না। সবাই জানে কারা খালের সীমানায় ভবন বানিয়েছে। ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল জনগণের। এই সীমানা কেউ দখল করতে পারবে না।

মেয়র আতিকুল বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে খাল দখলমুক্ত করে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করছি। কিন্তু মানুষ খালে ময়লা বন্ধ করছে না। সবাই বলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন কিছু করে না। এলাকাবাসীকে বলতে চাই, আপনারা যদি খালে ময়লা ফেলা বন্ধ করেন তাহলে জলাবদ্ধতা থাকবে না। শুধু সিটি করপোরেশন না, আপনাদের নিজেদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা খালের ময়লা পরিষ্কার করে দিচ্ছি৷ এখন খালের পাড়ে বাসিন্দাদের দায়িত্ব হবে ময়লা না ফেলা।

এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান।  

অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ, সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর রোকসানা আলম ও শাহিন আক্তার সাথী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪
এমএমআই/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।