ঢাকা: বাংলাদেশে মাছ, মাংসসহ অন্যান্য প্রাণিজ প্রোটিনের অভাব থাকবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন ও বিস্তারে শুধু কাজ করলেই হবে না, এর গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো বিজনেস প্ল্যানিং, টেকনোলজিস অ্যান্ড মার্কেটিং অ্যাডভাইস অ্যান্ড ইম্পপ্লেন্টেশন সাপোর্ট ফর লাইভস্টক সেক্টর’ বিষয়ে প্রণীত চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ভেলিডেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে মেধাবী কর্মঠ মানুষ প্রয়োজন। আর মেধাবী ও কর্মঠ মানুষ পেতে হলে প্রয়োজন প্রাণিজ আমিষের নিয়মিত জোগান। দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ছাড়া মেধাভিত্তিক জাতি গঠন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি জানান, এসব পণ্যের জোগান নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমার মাছ আছে, আমার লাইভস্টক আছে। যদি উন্নয়ন করতে পারি, ইনশাল্লাহ এ দিন আমাদের থাকবে না। ’ বঙ্গবন্ধুর সে আশাবাদকে হৃদয়ে ধারণ করে কাজ করলে আমাদের কোনো অভাব থাকবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) ২০৩০ অর্জনে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, সেক্টরাল প্ল্যান, সর্বোপরি বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্ত্রী এ সময় মন্তব্য করেন।
নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পূর্বে প্রাণিসম্পদ সেক্টর ছিল অনেকটাই অবহেলিত। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় প্রাণিসম্পদ সেক্টরের উন্নয়নের জন্য ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি বৃহৎ প্রকল্প দিয়েছেন। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন ও প্রযুক্তি বিনিয়োগে দক্ষতা বাড়িয়ে দুধ-মাংসের উৎপাদন বাড়ানো, খামারিরা যাতে বাজারে প্রয়োজনীয় একসেস পায় এজন্য ফরওয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ স্থাপন, স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পটি দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তার মাধ্যমে ডেইরি ও পোল্ট্রি সেক্টরে বিদ্যমান সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক ও যুগোপযোগী টেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের যে স্বপ্ন অভিযাত্রা সূচিত হয়েছে, তা পূরণে এ সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড, প্রাণিসম্পদ সেক্টরের আধুনিক ডিজিটাল ডেটাবেইজ প্রণয়ন, পশুবীমা চালুর ক্ষেত্র তৈরি এ সরকারের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ফুড সেফটি সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগ, বিশেষ করে জেলা পর্যায়ের আধুনিক পশু জবাইখানা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কাঁচা বাজার নির্মাণ করা হচ্ছে যার ফলে বিশৃঙ্খল ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই অনেকাংশে কমে যাবে। ৩টি বিভাগীয় শহরে (রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম) আধুনিক মানের মেট্রো স্লটার হাউজ নির্মাণ করা হবে যার ফলে মাংস রপ্তানিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি জানান।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) জনাব মো. আব্দুর রহিম, সার্ভিস অ্যান্ড সলিউশনস ইন্টারন্যাশন্যাল লিমিটেড (এসএসআইএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময় : ২০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
জিসিজি/জেএইচ