ঢাকা, বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নরসিংদীতে জেলা প্রশাসনের ‘রোজার সাশ্রয়ী বাজার’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৪
নরসিংদীতে জেলা প্রশাসনের ‘রোজার সাশ্রয়ী বাজার’

নরসিংদী: রমজানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনাবেচা করতে নরসিংদীতে সাশ্রয়ী বাজার শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে শহরের বঙ্গবন্ধু পৌর পার্কে ১২টি স্টল নিয়ে এ বাজারের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম।

 

রমজানজুড়ে প্রতি শনি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহে ৩ দিন সকাল ৯টা থেকে এ বাজার চলবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে বাজারের তুলনায় কম দামে পণ্য কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা, পাশাপাশি কৃষকরা সরাসরি ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রমজানে সাশ্রয়ী বাজার, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার এ স্লোগানকে সামনে রেখে নরসিংদীতে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে শুরু হয়েছে ‘রোজার সাশ্রয়ী বাজার’। এ বাজারে প্রচলিত বাজার দরের থেকে কম মূল্যে গরুর মাংস, মুরগির মাংস, মাছ, ডিমসহ টাটকা শাকসবজি ও এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে।  

সাশ্রয়ী বাজারে, প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা, যা অন্যান্য বাজারের তুলনায় হালিতে ১২ টাকা কম। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬৫০ টাকায়, যা স্বাভাবিক বাজারের চেয়ে ৫০ টাকা কম। এছাড়া কেজিপ্রতি অন্তত ১০ টাকা কমে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা। এছাড়া লাউ, টমেটো, ডাটা, মাছ সবই বিক্রি হচ্ছে স্বাভাবিক বাজার থেকে অন্তত ৩ শতাংশ কম দামে। এছাড়া নিয়ন্ত্রিত দ্রব্যমূল্যের সুবিধা নিয়ে কেউ যেন অধিক পরিমাণে পণ্য ক্রয় করতে না পারে এজন্য প্রতিটি সামগ্রী ক্রয়ের ক্ষেত্রে উচ্চসীমা (যেমন, গরুর মাংস ২ কেজির বেশি কেউ ক্রয় করতে পারবেন না) নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ছাড়াও নরসিংদীর নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের পবিত্র রমজান মাসে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে এ বাজারটি অসামান্য ভূমিকা রাখবে।

সাশ্রয়ী বাজারে বাজার করতে এসেছেন ব্রাহ্মন্দী এলাকার জামাল মিয়া। তিনি বলেন, বাজারের দ্রব্যের দাম অধিক থাকার কারণে আমাদের ইচ্ছে থাকলেও পণ্য কিনতে পারি না। জেলা প্রশাসনের এ বাজারে কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারছি। যার কারণে রমজান মাসের বাজার নিয়ে আর চিন্তা রইল না।

আরেক ক্রেতা খোরশেদ আলম কাইয়ুম বলেন, বাজারে বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম রাখেন, যার কারণে পণ্যের দাম আমাদের সাধ্যের বাইরে চলে যায়। এখানে নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। যার ফলে আমরা সঠিক দামে পণ্য কিনতে পারছি।

গরু বিক্রেতা আল মাহমুদ সোহেল বলেন, আমরা বাজার থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করছি। মানুষ লাইন ধরে মাংস কিনছে। আশা করছি প্রতি হাটে ৬০০ থেকে ৭০০ কেজি মাংস বিক্রি করতে পারবো।

মুরগি বিক্রেতা ইমরান হোসেন টিপু বলেন, আমরা সরাসরি খামার থেকে মুরগি ও ডিম কিনে নিয়ে আসছি। অল্প লাভ করে আমরা জেলা প্রশাসনের সাশ্রয়ী বাজারে বিক্রি করছি। বাজার দরের তুলনায় দাম কম হওয়ায় বিক্রি ও বেশি হচ্ছে।

নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. নূরুল ইসলাম বলেন, সাশ্রয়ী বাজারের পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকায় তাদের মধ্য স্বস্তি ফিরেছে। তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার করতে পারছে। পাশাপাশি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।

জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, সরাসরি খামারি, পোল্ট্রি চাষি, ও ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাম কমানো সম্ভব হয়েছে। এর সুপ্রভাবে অন্যান্য বাজারগুলোতেও দাম কমতে শুরু হয়েছে  পার্শ্ববর্তী শিক্ষা চত্বর সংলগ্ন নয়া বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, গরুর দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকা ও মুরগির দাম কেজি প্রতি ১০টাকা কমে গেছে ‘রোজার সাশ্রয়ী বাজার’ এর প্রভাবে। পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের জন্য মোবাইল হাট এর উদ্যোগ নেওয়া হবে। যাতে তারা ন্যায্য দামে বাজার করতে পারে।

আগামী মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) থেকে এ বাজারে চাল, তেল, ডাল, আটার মতো নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীও ন্যায্য মূল্যে পাওয়া যাবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৪
জেএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।