মাদারীপুর: রসালো ফল তরমুজের চাহিদা সাধারণ মানুষের কাছে বরাবরই ছিল শীর্ষে। একটি তরমুজ ৫/৬ জনের একটি পরিবারের চাহিদা বেশ ভালো ভাবেই মেটাতে পারে।
অনেকে অস্বাভাবিক এ দামের কারণে সামর্থ্য থাকার পরও তরমুজ কেনা থেকে বিরত রয়েছেন। তাদের মতে, 'মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ ৫/৬শ টাকা দিয়ে কেনার কোনো অর্থ নেই!'
এদিকে দুইদিন আগে দাম কিছুটা কমলেও শনিবার (২৩ মার্চ) পাইকারি বাজারে পিস প্রতি ৫০/৬০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে তরমুজ বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে বলে জেলার শিবচরের বিভিন্ন এলাকার একাধিক তরমুজ বিক্রেতারা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানের শুরু থেকেই বাজারে আকাশচুম্বী দাম নিয়ে হাজির হয় মৌসুমি ফল তরমুজ। বাজারে বিক্রি কম হলেও রমজানের প্রথম দিকে এক শ্রেণীর মানুষের ইফতারে যোগ হয় ফলটি। তবে অস্বাভাবিক দামের কারণে সমাজের বড় একটি শ্রেণী ব্যর্থ হয় তরমুজ কিনতে। এর পর অনেকের মধ্যেই তরমুজের প্রতি অনীহা তৈরি হয়। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও দাম না কমায় কমে যায় বিক্রিও। গত চার/পাঁচ দিনে দাম কিছুটা কমে যায় তরমুজের দাম।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, দুই সপ্তাহ আগে যে তরমুজ ৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা বর্তমানে চার/পাঁচশতে নেমে এসেছে। তবে গত বছর এই তরমুজের দাম ছিল ২৫০ টাকার মতো। তরমুজের দাম বেশি হওয়ায় বিক্রি অনেক কমে গেছে।
মো. আলমাস নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারের বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ফিরে শুধু দরদামই করছি। কেনার সাহস হচ্ছে না। দোকানিরা বলছে, দাম একটু কমেছে। কিন্তু তারপরও কম বলতে যা বুঝায় তা তো দেখছি না।
অপর ক্রেতা মো. নাজমুল বলেন, মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ কিনেছি চারশ টাকা দিয়ে। গতবারের তুলনায় দাম দেড়গুণ বেশি।
বাজার ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, দাম অনেক বেশি। রমজানকে পুঁজি করে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে এখন তরমুজ! তারপরও বাচ্চাদের জন্য মাঝে মধ্যে কিনতে হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলেন, গতবারের তুলনায় চলতি বছর তরমুজ বিক্রি কমেছে অনেক। দাম বাড়ায় ক্রেতারা তেমন কিনছে না। কয়েকদিন আগে পাইকারি বাজারে পিস প্রতি একশ থেকে দেড়শ টাকা কমেছিল। তবে শনিবার আবার বেড়েছে। প্রতি পিসে ৫০/৬০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও বেড়েছে। শিবচরে তরমুজ আসে মস্তফাপুর, বরিশাল ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে। পরিবহন খরচও বেশি। সব মিলিয়ে খুচরা বাজারে দাম তুলনামূলক বেশি।
মো. শামীম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা বেশি দামে কিনে আনি। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। শনিবার বাজারে দাম বেশি। বিক্রি আগের চেয়ে কম। তবে রমজানে বিকেলের দিকে একটু বিক্রি বাড়ে।
মো. বিল্লাল হোসেন নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, এ মৌসুমে দৈনিক ৫০/৬০ পিচের বেশি বিক্রি করতে পারছি না। গতবার দৈনিক একশ পিস বিক্রি হয়েছে এসময়। গতবারের তুলনায় বিক্রি অনেক কম হচ্ছে এখন।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি।
বিক্রেতাদের দাম বাড়ানোর প্রবণতা রয়েছে এখানে। শুধু রমজান মাসই নয়। সব সময়ই আমাদের মনিটরিং থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৪
আরএ