ঢাকা: আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ইদযাত্রা নিরাপদ করতে নৌপথে নৌপুলিশ অত্যন্ত দক্ষতা, পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (নৌপুলিশ) মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে ঢাকার নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ঈদে নৌপথে আইনশৃঙ্খলা ও নৌ-ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
নৌপুলিশ প্রধান বলেন, আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের নৌপথে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে নৌপুলিশ বদ্ধপরিকর। মানুষ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে যায়, আর আমরা ঈদের আনন্দ বিসর্জন দিই। নৌপুলিশ জন্ম থেকেই এই কাজটি করে যাচ্ছে। আশা করছি— আমাদের বিসর্জনে ঈদ আনন্দ আরও বেশি সুন্দর করে তুলবে। ঈদে নৌযাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে নৌপুলিশ সব নৌ ঘাট, নৌ টার্মিনালসমূহে দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি আরও বলেন, আমি নৌপুলিশের ১১টি অঞ্চলের এসপিকে এখানে উপস্থিত করেছি। উদ্দেশ্য একটাই— আপনাদের সমস্যাগুলো নোট করা, সমাধান করা। আশা করছি— এবারের ঈদে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা যে আস্থা অর্জন করেছি, সেটা নষ্ট করতে পারি না। মানুষ যাত্রাপথে নৌপথ বা নৌ যানবাহনকেই বেছে নেন, আমরা সেই ব্যবস্থাটাই করতে চাই। কারণ, সবচেয়ে নিরাপদ ও আরামদায়ক যাত্রা হচ্ছে নৌযাত্রা।
নৌপুলিশ প্রধান বলেন, নৌপথে যেকোনো সমস্যায় নৌপুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর-০১৩২০১৬৯৫৯৮ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে নৌপুলিশকে অবগত করলে নৌপুলিশ সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি নৌ-খাতে সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা কোনো ক্রটি-বিচ্চুতি দেখা মাত্র আমাদের জানান, আমাদের কোনো নৌ পুলিশ সদস্যদের সমস্যা থাকলেও জানান। আমরা ব্যবস্থা নেব।
সভায় বক্তারা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ নৌপথ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন। পবিত্র ঈদে নৌপথ ব্যবহারকারী ঘরমুখো মানুষের যাত্রা সহজ ও নিরাপদ করতে নৌপুলিশ আগামী ৬ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা থেকে বিরত থাকা, ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে যাত্রী পরিবহনে বিরত থাকা, লঞ্চে যাত্রী সংখ্যার আনুপাতিকহারে লাইফ জ্যাকেট, বয়া প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান চালানো, সূর্যাস্তের পর বাল্কহেড ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা, ঈদ পূর্ববর্তী পাঁচ দিন, ঈদ এবং ঈদ পরবর্তী পাঁচ দিনসহ মোট ১১ দিন বাল্ক হেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা, চাঁদাবাজি, চুরিসহ যেকোনো হয়রানি বন্ধে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধি করা, নৌযান চলাচলের পথে মাছ শিকারের জন্য জাল বিছানো প্রতিরোধ করা, বৈধ কাগজপত্রবিহীন কোনো নৌযান না চালানো, ন্যায্যমূল্যে ভাড়া আদায়ে তদারকি, টার্মিনাল ব্যতীত নদীর যেকোনো জায়গায় অন্য কোনো ছোট নৌযান থেকে যাত্রী উঠানো বা নামানো বন্ধ নিশ্চিতকরণ, সব নৌযানে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিং এবং সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থাকরণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি), বাঅনৌচ(যাপ), লঞ্চ মালিক সমিতি, নৌ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, কার্গো ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্ক হেড শ্রমিক ইউনিয়ন, লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন বাঘা বাড়ি, সুন্দর বন নেভিগেশন সদর ঘাট, এম কে শিপিং লাইন্সসহ নৌযান ও নৌপথের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, অতিরিক্ত ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ, ডিসি লালবাগ, ডিএমপি, নৌ পুলিশের সকল অঞ্চলের পুলিশ সুপারসহ নৌ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ২৭ মার্চ, ২০২৪
এমএমআই/এমজে