নীলফামারী: রেলের শহর নীলফামারীর সৈয়দপুরে দেড়শ বছরের পুরোনো গাছগুলো ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ঝড়-বৃষ্টি হলে সেই ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়।
গাছগুলো কেটে ফেলার জন্য বনবিভাগ নির্দেশনা দিলেও কাটা হচ্ছে না। চিঠি চালাচালির মধ্যে রয়েছে গাছ কাটার বিষয়টি। ফলে লোকজন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সৈয়দপুর শহরে ৮০০ একর রেলের জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দুই হাজার বিশাল বিশাল বৃক্ষ রয়েছে। ওই জমির ওপরে রয়েছে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা, রেলওয়ে পুলিশ লাইন, রেলের প্রশাসনিক দপ্তর, রেলওয়ে হাসপাতাল, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের দুটি গির্জা, রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বসবাসের জন্য একাধিক বাংলো ও কোয়ার্টার।
স্টেট বিভাগ সৈয়দপুর জানায়, বৃটিশ আমলে সৈয়দপুর শহরের শোভা বৃদ্ধি ও সুশীতল ছায়া দিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ওই সময় প্রায় দুই হাজার গাছ রোপণ করে। এসবের মধ্যে রয়েছে রেইনট্রি, কড়াই, সিরিস, কৃষ্ণচূড়া, ইউক্যালিপটাস, শাল, অর্জুন, দেবদারু ইত্যাদি। ১৮৭০ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা স্থাপনের আগে সৈয়দপুর শহর গড়ে ওঠে। ওই সময় শহরের রেলওয়ে অফিসার্স কলোনি, সাহেবপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, নতুন ও পুরাতন বাবুপাড়া, মুন্সিপাড়া, খালাসি মহল্লা, রোমান ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট গির্জা, পুলিশ লাইন, রেলওয়ে হাসপাতাল এমনকি রেলওয়ে কারখানায় রোপণ করা হয় ওই গাছগুলো।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেট বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, গাছগুলো সরকারি সম্পদ। ইচ্ছে হলেই এসব কেটে ফেলা যায় না। অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমরা ১৬টি ঝুঁকিপূর্ণ গাছ চিহ্নিত করেছি। সৈয়দপুর বনবিভাগের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে ওইসব গাছ কেটে ফেলার অনুমতি দিয়েছে।
সৈয়দপুর সামাজিক বনায়ন ও নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহিকুন ইসলাম মুশকরি জানান, সৈয়দপুর শহরের অনেক গাছই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে রেলের ১৬টি গাছ কেটে ফেলার অনুমতি দিয়েছি। এছাড়া অন্য গাছগুলো অনেক পুরোনো হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান জানান, শিগগিরই রেলের ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো কেটে ফেলা হবে। আসছে বর্ষায় একটি কাটা গাছের স্থলে একাধিক গাছ রোপণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৪
এসআই