ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রায় পুলিশের ‘না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৪
ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রায় পুলিশের ‘না’ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করছেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন

ঢাকা: ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা না করার জন্য জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অনুরোধ জানান।

আইজিপি বলেন, ঈদের সময় ঢাকা শহরে বিশেষ চাপ দেখা যায়। মানুষজন ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করেন। ইতোমধ্যে ঈদযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি আগামীকাল থেকে ঈদের যাত্রীদের বড় চাপ শুরু হবে। ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের চাপ থাকবে।

তিনি বলেন জনগণের ঈদযাত্রা যেন স্বস্তিদায়ক হয়, সেজন্য পুলিশের সব ইউনিট এক যোগে কাজ করছে। আমাদের ফুল ডেপ্লয়মেন্ট (মোতায়েন) রয়েছে। ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে পুলিশের সব সদস্য প্রস্তুত রয়েছেন এবং একযোগে কাজ করছেন। মাঠ পর্যায়ে পুলিশের যে সদস্যরা কাজ করছেন, তাদের তদারকি করছেন আমাদের সিনিয়র অফিসাররা। ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় সমন্বয় সভা করেছে। এ ছাড়া পুলিশও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করছে।

ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা না করার অনুরোধ জানিয়ে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আমরা যাত্রীদের বলতে চাই, আপনারা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনো বাহনের যাত্রী হবেন না। আমরা সবাই ঈদের আনন্দ আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করার জন্য নাড়ির টানে যাত্রা করছি। আমরা কেউ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আত্মীয়-স্বজনের কাছে যেতে চাই না। অনেককে দেখা যায়, ট্রাকসহ বিভিন্ন বাহনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ঈদযাত্রা করেন। তাই কেউ ঝুঁকিপূর্ণভাবে ঈদযাত্রা করবেন না।

তিনি বলেন, মহাসড়কে নসিমন, করিমন ও ভটভটির মতো বাহনের চলাচল বন্ধ থাকবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলবে। রাস্তায় আমাদের মোবাইল কোর্ট থাকবে। বেপরোয়া গতিতে যেন গাড়ি চালানো না হয়, সেজন্য আমরা চালকদের অনুরোধ জানাব। চালকদের বলব, বিনা প্রয়োজনে আপনারা ওভারটেকিং করবেন না।  

আইজিপি বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটনকেন্দ্রে জনসমাগম হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশসহ পুলিশের সব ইউনিট সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় করে কাজ করবে।  

ফাঁকা বাসার নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকেই বাড়ি যাবেন। ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাড়িতে কেউ যাতে অপরাধ সংগঠিত করতে না পারে, সেজন্য আপনারা ফ্ল্যাট বাড়ির নিরাপত্তার জন্য পাহারাদার নিয়োজিত করুন। সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক আছে কি না এবং যেদিকে মুখ করে থাকার কথা, সেদিকে আছে কি না, তা আপনারা চেক করে নেবেন, যাতে  অপরাধ সংগঠিত হলে পাহারাদার না ধরতে পারলেও আমরা যেন অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারি।  

জাল টাকার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈদের সময়ে দ্রুত কেনাকাটা হয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়। ফলে জাল টাকার কারণে অনেকে প্রতারিত হন। তাই জাল টাকার বিষয়ে সবাই সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং পুলিশকে জানাবেন।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া কোনো প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন করে আপনারা পুলিশি সেবা নিতে পারবেন। টাকা নিরাপদে সতর্কতার সঙ্গে পরিবহন করুন। প্রয়োজনে টাকা পরিবহনের সময় পুলিশের সহযোগিতা নিন। টাকা পরিবহনে আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা প্রস্তুত আছি।

ছিনতাই প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ঈদের সময় ছিনতাইকারীরা অপতৎপরতা বাড়ায়। আমরাও আমাদের কার্যক্রম বাড়িয়েছি। ছিনতাই নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা কাজ করছি। প্রতিটি ছিনতাইয়ের অভিযোগের বিষয়ে আমরা যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ দেশে এক সময় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের তৎপরতা চলছিল। আমরা সবার সঙ্গে মিলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। একইভাবে আমরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ছিনতাইকারীদের আমরা আইনের আওতায় আনছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৪
পিএম/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।