নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দর চলাচলের এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন। ফলে বিমান উঠানামায় যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্ষা মৌসুমে বা আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটলে যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তায় বিপদসীমার অনেক নিচে দিয়ে ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে উড়ন্ত বিমান অবতরণ করা হয় বিমানবন্দরে। ওই সময় ঘন মেঘের কারণে বিমান পাইলট সামনের কোনো উঁচু স্থাপনা বা টাওয়ার ভালোভাবে দেখতে পান না। যার ফলে পাইলট বারবার বিমান বন্দর টাওয়ারের কাছে জানতে চান অবতরণ বিমানের সামনে কোনো বহুতল ভবন, টাওয়ার বা গাছপালা আছে কিনা। থাকলে সেখানে আঘাত পেলে বিমান ক্রাশের সম্ভাবনা থাকে শতভাগ। এ কারণে বিমান ক্রাশের ভয়েই বিমানবন্দরের ২৫ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে কোনো প্রকার বহুতল ভবন বা টাওয়ার স্থাপনে অনুমতি দেওয়া হয় না। বিমান ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় ওই নির্দেশনা দেওয়া না হলেও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উত্তর পার্শ্বে সহ কয়েক স্থানে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিমানবন্দর রানওয়ের উত্তর পার্শ্বে ৪০০ ফিটের মধ্যে নুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তি সিভিল অ্যাভিয়েশনের আইনকে তোয়াক্কা না করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। বিমান কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও পোর সভার নকশা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারো অনুমতির দরকার নাই। ভবনটি নির্মাণের জন্য ওপর মহলের নির্দেশ রয়েছে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা সৈয়দপুরে দালানকোঠা বা বহুতল ভবন নির্মাণ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিমানবন্দরের ২৫ নটিক্যাল মাইল এলাকা বাদ দিয়ে নির্মাণের জোর তাগিদ দেওয়া হলেও তা মানছেন না নুর ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি সহ অনেকেই।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পূর্বপাশে সেনানিবাস, উত্তর ও পশ্চিম পাশে পৌর এলাকা এবং দক্ষিণ পাশে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন। বিধি অনুযায়ী ২৫ নটিক্যাল মাইল এলাকা বাদ দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য সৈয়দপুর পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে সিভিল এ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। বর্তমান পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে বিমান উঠানামায় আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ জানান, বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি আঞ্চলিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। বর্তমানে এ বিমানবন্দরে প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমান, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাসট্রা বিমান চলাচল করছে। যাত্রীসেবাও দেওয়া হচ্ছে শতভাগ।
সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবি বলেন, নিরাপদে বিমান চলাচলের স্বার্থে রানওয়ে সংলগ্ন বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য কোনো নকশা পাস করা হয়নি। যারা রানওয়ের আশপাশ এলাকার বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন তারা এক প্রকার গায়ের জোরেই করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭,২০২৪
এসএম