ঢাকা: রেলের রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত তথ্যে ‘মনগড়া’ ও ‘আনুমানিক’ তথ্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী লিখিত বক্তব্য দেন।
রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারে কারণে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির ফলে বাসের চেয়েও অতিরিক্ত অর্থ যাত্রীদের খরচ হবে দাবি করে পাঁচ রুটের বাস ও রেলের ভাড়ার তালিকা দেন তিনি।
তিনি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা নিশীথা ট্রেনে শোভন চেয়ারে আগের ভাড়া ছিল ৩৪৫ টাকা, এখন রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের পর দাঁড়াচ্ছে ৪০৫ টাকা। এই টিকিট কালোবাজারির কাছ থেকে যাত্রীদের কিনতে হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী দাবি করেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০ টাকা, সরাসরি (চেয়ার কোচ) বাসের ভাড়া ৬৮০ টাকা।
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা-খুলনা রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ারে ৫০০ টাকার ভাড়া এখন দাঁড়াচ্ছে ৬২৫ টাকা। অথচ এই রুটে বাসে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় যাতায়াত করেন যাত্রীরা।
ঢাকা-রংপুর রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ারের টিকিটের দাম ছিল ৫০৫ টাকা। এখন দাঁড়াচ্ছে ৬৩৫ টাকা। যা কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা লাগে। অথচ ঢাকা-রংপুর রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০-৫০০ টাকা, সরাসরি বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা।
ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে ট্রেনের ৫১০ টাকার শোভন চেয়ারের টিকিটের দাম এখন দাঁড়াচ্ছে ৬৪৫ টাকা, যা কালোবাজারে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ এই রুটে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায় উন্নতমানের বাসে যাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে ট্রেনের এসি বার্থের মূল্য ২৪০০ টাকা। এই রুটে বিলাসবহুল বাসে এসি স্লিপারের ভাড়া ১৮০০ টাকা।
যদিও টিকিট বিক্রির প্লাটফর্ম সহজ ডটকম ও অন্যান্য মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-খুলনা রুটে সোহাগ পরিবহনের ভাড়া ৬৫০ টাকা। আর হানিফ পরিবহন ও টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের ভাড়া ৭৫০ টাকা।
ঢাকা-রংপুর রুটে হানিফ, নাবিল ও এনা পরিবহনের নন-এসি চেয়ার কোচের ভাড়া ৮০০ টাকা।
ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে চলাচলকারী এনা পরিবহনের নন-এসি চেয়ার কোচের ভাড়া ৮৫০ টাকা, হানিফ ও নাবিল পরিবহনে ৯৫০ টাকা করে নেওয়া হয়।
আর ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে রোজিনা এন্টারপ্রাইজের নন-এসি চেয়ার কোচের ভাড়া ৮৫০ টাকা হলেও হানিফ ও নাবিল পরিবহনে রাখা হচ্ছে ১১০০ টাকা।
তুলনা করতে গিয়ে বাস ভাড়ার তথ্যে অসংলগ্নতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আমরা একটি আনুমানিক তথ্য দিয়েছি৷ আমরা বোঝাতে চেয়েছি যে, বাসের চেয়ে রেলের ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে। গণমাধ্যম থেকেই আমরা তথ্য সংগ্রহ করি।
কোন গণমাধ্যম থেকে তথ্য নিয়েছেন, এমন প্রশ্ন করলে মোজাম্মেল হক কোনো তথ্য না দিয়ে ‘ভুল হয়েছে’ বলে স্বীকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
এনবি/এইচএ/