ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শরীয়তপুরে শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে দুই চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৪
শরীয়তপুরে শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে দুই চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ  অভিযুক্ত এলিম পাহাড়

শরীয়তপুর: শরীয়তপুর আন্তঃজেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি এলিম পাহাড়ের বিরুদ্ধে সদর হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।  

শনিবার (৪ মে) দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটেছে।

ওই দুই চিকিৎসক হলেন সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান ও মেডিকেল অফিসার শাহরিয়ার ইয়াছিন। এদের মধ্যে শাহরিয়ার ইয়াছিনকে মারধর করা হয়েছে। আর হাবিবুর রহমানকে ধাক্কা দিয়ে, টানা হ্যাঁচড়া করে গালাগালি করা হয়েছে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর পৌরসভার বালুচরা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শরীয়তপুর আন্তঃজেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি এলিম পাহাড়। শনিবার সকালে একটি মারামারির ঘটনায় তার কিশোর ছেলের মাথায় আঘাত পান। তাকে নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে আসেন কয়েকজন। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন এলিম পাহাড়। জরুরি বিভাগে ওই কিশোরের চিকিৎসা চলছিল। দ্রুত কেন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না এমন কথা বলে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের গালমন্দ করতে থাকেন এলিম পাহাড়। তখন জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত নারী চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনাকে গালমন্দ করলে সেখানে উপস্থিত চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন। তখন শার্টের কলার ধরে তাকে মারধর করা হয়। এ সময় ওই চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে ফেলে দেওয়া হয়। এমন ঘটনা শুনে জরুরি বিভাগে ছুটে যান সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান। তখন তাকে ধাক্কা দিয়ে টানা হ্যাঁচড়া করা হয় এবং গালাগালি করা হয়। পরে ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ হাসপাতালে যান। ততক্ষণে এলিম পাহাড় ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। আর চিকিৎসকরা এলিম পাহাড়ের ছেলেকে আন্তঃবিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেন।

হামলার শিকার সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার শাহরিয়ার ইয়াছিন বলেন, আজকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দায়িত্বরত চিকিৎসক ছিলেন ডাক্তার লিমিয়া। আহত ছেলেটাকে কিন্তু ডক্টর লিমিয়া আপা একবার দেখেছেন। দেখার পরে ড্রেসিং করার জন্য হ্যান্ড গ্লাভস পড়তে ছিলেন। সেসময় আমি পাশের চিকিৎসকদের কক্ষে কিছু প্রশাসনিক কাজ  করছিলাম। এর মধ্যে এলিম পাহাড় এসে লিমিয়া আপার ওপরে চড়াও হয় এবং আজেবাজে কথা বলে গালিগালাজ করেন। তখন আমি প্রতিবাদ করলে এলিম পাহাড় আমার গলা চেপে ধরেন এবং কিল, ঘুসি ও থাপ্পড় মারেন। আমার গলার অবস্থা ভালো না ভালোভাবে কথা বলতেও পারছি না। আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমি। যেন আর কোনো ডাক্তারের সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে।  

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের এক চিকিৎসককে রোগীর স্বজনরা মারধর করছেন। এমন খবরে আমি জরুরি বিভাগে গেলে। ওই রোগীর স্বজন আমার ওপরেও চড়া হয়, আমাকে টানা হ্যাঁচড়া করেন। এখন বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছে। সবার সঙ্গে কথা বলে আইনগত পদক্ষেপ নেব।  

এ ব্যাপারে এলিম পাহাড়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।  

এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ওসি মেজবাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের লাঞ্ছিত করার তথ্য পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। সেখান থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এখন ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা লিখিত অভিযোগ করলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।