ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেমিকার সঙ্গে বিষ পানে মারা যাওয়া সেই মুরাদও পাস করেছেন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৪
প্রেমিকার সঙ্গে বিষ পানে মারা যাওয়া সেই মুরাদও পাস করেছেন

জয়পুরহাট: পরিবার প্রেমের ঘটনা জেনে যাওয়ার পর প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে বিষপান করেছিলেন ক্ষেতলাল উপজেলার খাঁড়িতা গ্রামের দোলন শেখের ছেলে মুরাদ শেখ (১৮)। মৃত্যুর আগে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি।

সেই পরীক্ষায় জিপিএ ২.৮১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন মুরাদ।

তবে ছেলের পাসের খবরে বাবা দোলনের মুখে হাসি নেই। আনন্দ নেই মুরাদের মায়েরও। বরং ছেলের পাসের খবরে কাঁদছেন তারা।

মুরাদের ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়তারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের আকন্দ। তিনি বলেন, নিহত মুরাদ এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ২.৮১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।  

প্রেমিকাকে নিয়ে মুরাদ বিষপান করেন গত ৪ এপ্রিল। মূলত, প্রেমের পরিণয় দিতে পারবেন না চিন্তা করে আত্মহত্যার জন্য প্রেমিকা তাজমিন আক্তারকে নিয়ে একসঙ্গে বিষপান করেন মুরাদ। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি কারা হয়। পরে ৮ এপ্রিল ভোরে মুরাদ শেখ জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদিন রাতেই প্রেমিকা তাজমিন আক্তারও (১৬) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

নিহত মুরাদ বড়তারা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তার প্রেমিকা তাজমিন আক্তার একই গ্রামের তোজাম খাঁর মেয়ে ও বাঁকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

তাদের সম্পর্ক ও আত্মহত্যার ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে, মুরাদের সঙ্গে তাজমিন আক্তারের প্রেমের সম্পর্কটি তাদের দুই পরিবারের কেউই  মেনে নেয়নি। একপর্যায়ে মুরাদকে তার পরিবার মালয়েশিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ঈদের পর ২১ এপ্রিল তার ফ্লাইট ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে, পরিবারকে চাপে পড়ে তারা দুজনেই পরিকল্পনা করে বিষপানের সিদ্ধান্ত নেয়।

গত ৪ এপ্রিল বিষপানের পর জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা মুরাদকে। দুদিন সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ওই রাতেই প্রেমিকা তাজমিন আক্তারও অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে তারও মৃত্যু হয়।

বড়তারা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাকারিয়া হোসেন রুমি বলেন, মুরাদ এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। কিন্তু এ ফল খুশি বয়ে আনেনি। বরং তার পরিবারে নতুন করে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৪
এসএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।