নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
এ ছাড়া নিহত সুমন মিয়ার ঘাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গ্রামবাসী। তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল ঘাতক রুবেলের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
বিকেলে রায়পুরার সেরাজনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিহত সুমন মিয়ার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা।
জানাজায় রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার মাস্টার মাইন্ড রুবেলসহ সব ঘাতকদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পরে বাদ মাগরিব চরসুবুদ্ধি ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান সুমন মিয়া নিহতের ঘটনায় রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের ঢাকা অঞ্জলের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রায়পুরা উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবর জানানো হয়।
এদিকে ঘটনার পর পুলিশের একাধিক দল হত্যার কারণ উদঘাটন ও ঘাতকদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন। রাতে ঘাতক আবিদ হাসান রুবেলকে গ্রেপ্তারের জন্য দুটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তিনি ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করায় তাকে গ্রেপ্তার সম্ভব হয়নি। তবে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, আবিদ হাসান রুবেলের মামাতো ভাই আলামিন ও মামা বাছেদ। তাদের ১৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় সুমন গুরুতর আহত হয়নি। তবে ঘটনার পর তিনি প্রাণে বাঁচার জন্য দীর্ঘ চর এলাকা দৌড়েছেন। এমনকি সাঁতরে একটি খালও পারি দিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি খুবই ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিহত সুমন মিয়ার ময়নাতদন্ত করেছে ৪ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল। সেই দলের সদস্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. মাহামুদুল কবীর বাসার (কমল) জানান, নিহত সুমন মিয়ার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই নিহতের ভিসেরা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁর প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়নি। এ ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্তের পর বলা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৬ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৪
আরএ