ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন কল্যাণপুর খালের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ডাচ ওয়াটার সেক্টর কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বুধবার (২৯ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশান নগর ভবন ডিএনসিসি মেয়রের কার্যালয়ে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ও ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেনের উপস্থিতিতে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
ডাচ ওয়াটার সেক্টর কনসোর্টিয়াম মূলত সিডিআর ইন্টারন্যাশনাল, এইচকেভি, উইটভিন অ্যান্ড বস, ওশানবাউন্ড, রেড অরেঞ্জ লিমিটেড ও আইডি ড্রেজিংয়ের সমন্বয়ে গঠিত ।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম ও সিডিআর ইন্টারন্যাশনাল বিভি বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সিপ্রিয়ান হেনড্রিক্স সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
এ চুক্তির মাধ্যমে ঢাকার জন্য জলবায়ু সহনশীল, প্রকৃতিভিত্তিক, ঝড়ের মাধ্যমে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে কল্যাণপুর খাল প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে।
জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনের জন্য কল্যাণপুর খালকে পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া ও খালের পানির গুণমান উন্নত করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন কল্যাণপুরের চারপাশের সামগ্রিক পরিবেশের উন্নত হবে, তেমনি প্রস্তাবিত কল্যাণপুর হাইড্রো ইকোপার্কসহ অন্যান্য নগর উন্নয়ন উদ্যোগের সাফল্যকে ত্বরান্বিত করবে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, নেদারল্যান্ডসের শহরগুলোয় দৃষ্টিনন্দন খাল দেখেছি। খালগুলোয় নৌযান চলাচল করে। নেদারল্যান্ডসের শহরগুলোর খালের আদলে ঢাকার খালগুলোর উন্নয়ন করতে চাই। জলাবদ্ধতা নিরসনে নেদারল্যান্ডসের উত্তম কার্যক্রমের মডেল ও অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য সহায়ক হবে। এই চুক্তির মাধ্যমে নেদারল্যান্ডসের কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় কল্যাণপুর খালের সমন্বিত টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে। জলাবদ্ধতা নিরসন, স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনাও নিশ্চিত হবে। দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন তার দেশ ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জলাধার ব্যবস্থাপনায় নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিনের অংশীদার। নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ও পানি অবকাঠামো উন্নয়নে অন্যান্য অনেক উদ্যোগের গর্বিত অংশীদার। এই প্রকল্পটি একটি টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল ভবিষ্যতের দিকে একটি নতুন যাত্রা চিহ্নিত করবে।
উল্লেখ্য, কল্যাণপুর খালের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাগুলো অনুসন্ধানের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, পাইলটিং এবং অন্যান্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে। এর মধ্যে রয়েছে কল্যাণপুর খালের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, চারপাশের এলাকার উন্নয়ন, পার্ক উন্নয়ন এবং বাঁধের সৌন্দর্যবর্ধন। সম্মিলিত এই প্রচেষ্টা কল্যাণপুর এলাকার রূপান্তর ঘটাবে, এর বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করবে। সেই সাথে টেকসই নগর উন্নয়নের জন্য এটি একটি রোল মডেল হবে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মাহে আলম, ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ডেলিগেটেড রিপ্রেজেন্টেটিভ-ওয়াটার নিলচা কিলেন, রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক অর্ণব চক্রবর্তী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
এমএমআই/এমজে