ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চুয়াডাঙ্গায় সাংবাদিককে পুলিশের হেনস্তা, ব্যবস্থা নিতে বলল মানবাধিকার কমিশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৪
চুয়াডাঙ্গায় সাংবাদিককে পুলিশের হেনস্তা, ব্যবস্থা নিতে বলল মানবাধিকার কমিশন

ঢাকা:চুয়াডাঙ্গায় দুই সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে গত ৩ জুন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে প্রকাশিত সংবাদটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।

ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) বলেছে মানবাধিকার কমিশন।

বুধবার (৫ জুন) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সুয়োমটোতে উল্লেখ করা হয়, সংবাদ প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গায় চিত্র সাংবাদিক ও ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধিকে মারধর এবং হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। রোববার (২ জুন) রাত ৯টার দিকে শহরের সাতগাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাতগাড়ি এলাকার একটি পারিবারিক বিবাদের মীমাংসা করতে যায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নাসরিন আক্তারসহ সঙ্গীয় ফোর্স। এ সময় নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপারসন শিমুল হোসেন।

পরে পুলিশ সদস্যরা অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যাপারে শিমুলের কাছে জানতে চান। শিমুল তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হেনস্তা করেন পুলিশ কনস্টেবল শাহীন। পরে তার কাছে টেলিভিশনের আইডি কার্ড দেখতে চান পুলিশ কনস্টেবল।

এক পর্যায়ে বিষয়টি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলীকে জানানো হলে আরও ক্ষুব্ধ হয় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা। সেই সঙ্গে যোগ দেয় সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুন।

এসআই মামুন ও এএসআই নাসরিনের নির্দেশে চিত্র সাংবাদিক শিমুলকে পিকআপভ্যানে তোলা হয়। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সেলিম। এ সময় তিনি পিকআপভ্যানের ছবি তুলতে গেলে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এসআই মামুন। ভেঙে ফেলা হয় সাংবাদিকের ব্যবহৃত ফোনটি।

পরে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করলে ওই চিত্র সাংবাদিককে পিকআপভ্যান থেকে নামিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন পুলিশ সদস্যরা।

চিত্র সাংবাদিক শিমুলের অভিযোগ, শুরু থেকেই অশালীন ব্যবহারে মারমুখী আচরণ করেন পুলিশ সদস্যরা। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। পরে পিকআপভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন। স্থানীয় লোকজনও এর প্রতিবাদ করেন।

ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, প্রথমে পুলিশ সদস্যদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কথা থানার ওসিকে জানানো হলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পুলিশ সদস্যরা। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাকেও হেনস্তা করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন।

সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, রাষ্ট্রের পেশাদার শৃঙ্খলা বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধর এবং হেনস্তা করা বিষয়ক অভিযোগটি অত্যন্ত অনভিপ্রেত। পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্যের এমন কর্মকাণ্ডে দেশে-বিদেশে পুরো বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। ওই ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া সমীচীন বলে কমিশন মনে করে।

এ অবস্থায়, চুয়াডাঙ্গায় সাংবাদিককে মারধর এবং হেনস্তা করার ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করা এবং বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাতে আইজিপিকে বলা হয়েছে। আদেশের অনুলিপি সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৪
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।