ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চুয়াডাঙ্গায় রেলওয়ে ওভারপাসের নকশার ত্রুটি সংশোধনে ব্যয় বেড়েছে ১১ কোটি

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৪
চুয়াডাঙ্গায় রেলওয়ে ওভারপাসের নকশার ত্রুটি সংশোধনে ব্যয় বেড়েছে ১১ কোটি

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় নির্মাণাধীন রেলওয়ে ওভারপাসের নকশায় ত্রুটি সংশোধনে ব্যয় বেড়েছে আরও ১১ কোটি টাকা।  

নতুন নকশায় বেড়েছে ওভারপাসের র‌্যাম্পের আয়তন।

সেই সঙ্গে কাজ শেষের মেয়াদ বেড়েছে আরও এক বছর।  

প্রায় বছর খানেক ধরে চলা নির্মাণ কাজে এখন অনেকটাই দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন ওভারপাস। একের পর এক বসছে স্প্যান। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, নির্মাণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।  

এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ের আগেই বাকি কাজ শেষ হবে।

জানা গেছে, যানজট কমানো ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপনসহ নানা সমস্যা সমাধানে চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলবাজার এলাকায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২২ সালের ২৮ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ দরপত্র আহ্বান করে। ঢাকা বনানীর ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (এনডিই) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। ৭৪৮ দশমিক ৬৯৬ মিটার আয়তনের এ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৫ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা। আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ১২ আগস্ট। প্রথম কার্যাদেশ অনুযায়ী, কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জুন মাসে। কাজ শুরুর পর প্রথম দিকে বেশ দ্রুত গতিতেই চলছিল নির্মাণ কাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্মাণ কাজ চলাকালেই বিপত্তি দেখা দেয় ওভারপাসের নকশার র‌্যাম্পের আয়তন নিয়ে। দু প্রান্তের র‌্যাম্পের নকশায় প্রথমে আয়তন ধরা হয়েছিল ৩৩০ মিটার। এতে ওভারপাসে উঠতে সংযোগ পথ অনেকটা খাড়াখাড়ি হচ্ছিল। এজন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) পাঠানো হয়। সংশোধিত নকশায় ওভারপাসে উঠতে সংযোগ সড়ক অর্থাৎ র‌্যাম্পের আয়তন বাড়ানো হয়েছে। দুপ্রান্তে র‌্যাম্পের আয়তন বেড়েছে আরও ১১২ মিটার। এতে নতুন করে আরও ব্যয় বেড়েছে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এ অবকাঠামো নির্মাণে এখন মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮৬ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার টাকায়। সেই সঙ্গে সময়ও বেড়েছে আগামী ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত।

ব্যয় ও সময়ের সঙ্গে বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। অভিযোগ, কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে বলে এ এলাকায় চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন তারা। দ্রুতই উন্নয়নের ভোগান্তি লাঘবের দাবি তাদের।

খান ফয়সাল নামে এক যুবক বলেন, প্রথমদিকে ওভারপাসের কাজ দ্রুত গতিতেই চলছিল। কিন্তু মাঝপথে এসে কাজ স্লো হয়ে গেছে। এজন্য এ পথ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। রাস্তা খুড়ে রাখায় যখন তখন ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটছে।

ইজিবাইকচালক ইয়াসিন হোসেন বলেন, এ রাস্তায় সহজে চলাচল করা যাচ্ছে না। আবার যদি কাজ শেষ হতে আরও এক বছর লেগে যায়, তাহলে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। দ্রুত কাজ শেষ হলে চলাচলে গতি ফিরবে।

তবুও রেলওয়ে ওভারপাসের জন্য দিন গুণছেন জেলাবাসী। ভোগান্তি পেরিয়ে স্বস্তির অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর উজ্জ্বল হোসেন জানান, এখন চলাচল করতে কিছুটা কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু ওভারপাসের কাজ শেষ হলে সে সমস্যা আর থাকবে না। তখন মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবেন। তখন মানুষের কর্মঘণ্টাও বাঁচবে।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, ওভারপাসের কাজ ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজের জন্য সময় রয়েছে আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত। আমাদের আশা, এর আগেই অর্থাৎ আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারির মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৪
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।