সিলেট: চার পয়েন্টে কুশিয়ারা, একটিতে সুরমার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। যেকারণে এখনো ১১৮০টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে ১৩ উপজেলায়।
এবার কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কবলে পড়ে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন ৭ সাত উপজেলার মানুষ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সিলেটের জকিগঞ্জে।
বৃহস্পতিবারে (৪ জুলাই) কুশিয়ারার পানি ওই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫৬ সেন্টিমিটার উপরে ওঠায় বিগত বন্যায় ভাঙা ডাইকগুলো ডুবিয়ে পানি ডুকেছে লোকালয়ে। প্লাবিত করেছে ৮৭টি গ্রাম। আর উপজেলার লাখের ওপর মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস খামারের।
শুক্রবার (৫ জুলাই) কুশিয়ারায় জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে পানি সকালে ছিল বিপৎসীমার ১৪৩ সেন্টিমিটার ওপরে। সন্ধ্যা ৬টায় ১৩৩ সেন্টিমিটারে নেমে এসেছে।
তবে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় কুশিয়ারার তীরবর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দারা। বন্যার পানিবন্দি থাকাবস্থায়ই আবারও প্লাবিত হয় ফেঞ্চুগঞ্জ।
শুক্রবার (০৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারার এ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১০৩ সেন্টিমিটার ছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেটের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে নেমেছে।
কুশিয়ারা নদীর পানি বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে সকাল থেকে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার কমে ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জকিগঞ্জের অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার গতকাল দুপুরে ছিল ১৫৪ সেন্টিমিটার, শুক্রবার সকালে ১৪৩ থেকে ১৩৩ সেন্টিমিটারে নেমে এসেছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার এবং শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ২৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ৯ হাজার ৩৬৭ জন।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সিলেটের ১৩টি উপজেলার এ পর্যন্ত পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ৬ লাখ ২৬ হাজার ১৩৮ জন। ১০১টি ইউনিয়নের ১১৮০টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৪
এনইউ/জেএইচ